জামালপুরে দুর্গত এলাকার পানি নেমেছে, ঘরে ফিরছেন বন্যার্তরা

জামালপুরে বন্যাকবলিত এলাকায় পানি কমে যাওয়ায় সড়ক ও ফসলি জমি আবার জেগে উঠতে শুরু করেছে। আজ রোববার সকালে ইসলামপুর উপজেলার আমতলী এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

জামালপুরে বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। তলিয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি আবার জেগে উঠতে শুরু করেছে। ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন বানভাসি মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোয় এখনো খাবারের সংকট আছে বলে জানা গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। বন্যার পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে, খেয়ে না–খেয়ে কোনোরকমে দিন কাটিয়েছেন দুর্গত মানুষ। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, এ সময় ত্রাণের চাল, এমনকি শুকনা খাবারও ঠিকমতো পাননি তাঁরা। এখনো সেই খাদ্যসংকট চলছে। তবে এর মধ্যেও বানভাসি মানুষ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় জেলার বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার ৪০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ২ লাখ ৫০ হাজার ২২৮ জন বাসিন্দা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট, হাটবাজার, ফসলি জমি, মৎস্যখামার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যার পানিতে ডুবে তিন শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জামালপুর কার্যালয়ের পানি পরিমাপক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে পানি ১১ সেন্টিমিটার কমে আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। খুব দ্রুত পানি নেমে যাচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুর্গত এলাকার সব পানি নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আপাতত আর পানি বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ২ জুলাই থেকে যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ায় জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত সোমবার থেকে পানি নামতে শুরু করে। পানি নেমে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দ্বিতীয় দফায় গত বুধবার থেকে পানি আরও বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় দফায় পানি বেড়ে আবারও বিপৎসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে আবারও বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। তবে গতকাল শনিবার সকাল থেকে খুব দ্রুতগতিতে পানি কমতে শুরু করেছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। দুর্গত এলাকায় প্রতিদিন পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। বন্যাদুর্গত একটি মানুষেরও না খেয়ে থাকার সুযোগ নেই। কারণ, প্রতিটি এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।