বরগুনার আমতলীতে বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানকে প্রধান আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। একই ঘটনায় একটি মামলায় ৫৫ জনের নাম উল্লেখ ও অন্যটিতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সোয়েব ইসলাম (হেলাল) বাদী হয়ে ৫৫ জনের নামে এবং পৌর যুবদলের সভাপতি জাকির হাওলাদার বাদী হয়ে ৩৮ জনের নামে ওই মামলা দুটি করেন। দুটি মামলায় ২০০ জন করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মতিয়ার রহমান ছাড়াও মামলা দুটির উল্লেখযোগ্য কয়েকজন আসামি হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম ওসমানী হাসান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাজমুল আহসান নান্নু প্রমুখ। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দাবি, তাঁরা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত নন। অহেতুক হয়রানি করতে একই ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে।
মামলা দুটির এজাহার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দুটি এজাহারই একই ধরনের। তবে ঘটনার সময়ের ভিন্নতা আছে। একটিতে ঘটনার সময় বেলা পৌনে একটা উল্লেখ করা হলেও অন্যটিতে বেলা দেড়টা উল্লেখ করা হয়েছে। দুটি এজাহারেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করা হয়েছে। দুটিতেই কার্যালয়ের আসবাব তছনছ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একটি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক লাখ টাকা উল্লেখ করা হলেও অন্যটিতে তিন লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধান আসামি মতিয়ার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হয়রানি করতেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ওই কার্যালয় তাঁরা ভাঙচুর করেননি। উল্টো বিএনপির নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখল করেছেন।
জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব তুহিন মৃধা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জি এম ওসমানী হাসানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম ওসমানী হাসান বলেন, ‘একই ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা করেছে। এতেই প্রমাণ হয়, মামলা মিথ্যা। অহেতুক হয়রানি করতেই এই মামলা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার দিন তো আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠেই ছিলেন না।’
এ বিষয়ে মামলার বাদী জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষ দুই দফায় তাঁদের কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ জন্য তাঁরা আলাদা আলাদা মামলা করেছেন।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় আওয়ামী লীগের ৯৩ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি চার শতাধিক।