আনোয়ারার সাগরপাড়ে মাঘে ফলছে তরমুজ, বিক্রি হচ্ছে খেতেই

চট্টগ্রামের আনোয়ারার রায়পুর উপকূলে খেত থেকে তরমুজ তুলছেন এক কৃষক। আজ দুপুরে দুপুরে তোলাছবি: প্রথম আলো

দূর থেকে মনে হতে পারে, সাগরের বালিয়াড়িতে কেউ সবুজ গালিচা বিছিয়েছে। কিন্তু কাছে যেতেই চোখে পড়বে, ছোট ছোট লতায় শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন আকারের তরমুজ। নভেম্বর মাসের শেষের দিকে লাগানো তরমুজের বীজ থেকে এখন তরমুজ বিক্রির উপযুক্ত হয়েছে। শুরু হয়েছে বিক্রিও।

দৃশ্যটি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার উপকূলীয় রায়পুর ইউনিয়নের ধলঘাট এলাকায়। ওই এলাকার পতিত বালিয়াড়িতে আগাম তরমুজের ফলন হয়েছে।

এলাকা ঘুরে জানা গেছে, আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ধলঘাট এলাকাটি বঙ্গোপসাগর বালিয়াড়িতে ভরা। সমুদ্রের লবণাক্ত পানি ওঠানামা করায় ওই বালিয়াড়ি মূলত পতিত। কিন্তু বালিয়াড়িতে শীতকাল এলেই তরমুজ চাষ করেন স্থানীয় চাষিরা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫ বছর ধরে স্থানীয় চাষিরা তরমুজ চাষ করে আসছেন। বালিয়াড়িতে উৎপাদিত তরমুজ আকারে ছোট হলেও স্বাদে ভালো হওয়ায় গ্রাহকের কাছে এসব তরমুজ পছন্দের। লাভ হওয়ায় চাষিরা ধারাবাহিক তরমুজ চাষ করে আসছেন। ইতিমধ্যে খেতের তরমুজ চার থেকে পাঁচ কেজি আকারের হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি উৎপাদন করেন কৃষকেরা। এর মধ্যে ৪৩ হেক্টর জমিতে ১২৫ থেকে ১৩৫ জন চাষি তরমুজ চাষ করেন। এসব তরমুজের মধ্যে গ্লোরি জাম্বু, গ্লোরি, সুইট ড্রাগন, বিগ ফ্যামিলি, চ্যাম্পিয়ন, সুপার এমপেরর, বাংলালিংক ও পাকিজা জাত রয়েছে। ওই সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশের চর এলাকায় আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ১০ জন চাষিকে কৃষি কার্যালয় থেকে প্রদর্শনী উপকরণও দেওয়া হয়েছে।

খেতের পাকা তরমুজ। আজ দুপুরে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুরে
ছবি: প্রথম আলো

চাষিরা জানান, সমুদ্র উপকূল ও শঙ্খ নদের মোহনার প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৫ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করে আসছেন চাষিরা। বর্তমানে তরমুজখেত থেকে ফলনও আসতে শুরু করেছে। সপ্তাহখানেক পর পুরোদমে বাজারজাত করা সম্ভব হবে।

১০ বছর ধরে তরমুজ চাষ করে আসা তরমুজচাষি নঈম উদ্দিন বলেন, ‘আমি পাঁচ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এতে খরচ বাদ দিয়ে লাখের ওপর লাভ হবে।’ তিনি আরও বলেন, একেকটি তরমুজ ৩০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। আগামী ছয় মাস চাষিরা দুই ধাপে তরমুজ চাষ করবেন।

আনোয়ারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, আনোয়ারা উপকূলের তরমুজগুলো বেশ সুস্বাদু। আগামী বছর থেকে ওই এলাকায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।