রিমান্ড শেষে দুই আসামি আদালতে

মরদেহ
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় বাসায় ঢুকে গৃহবধূ উম্মে সালমাকে (৫০) হত্যার পর লাশ ফ্রিজে রাখার ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে রিমান্ড শেষে আজ রোববার আদালতে পাঠানো হয়েছে। ওই দুই আসামির নাম মাবিয়া সুলতানা ও সুমন রবিদাস।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন রবিদাস হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দুপচাঁচিয়া থানা-পুলিশ সালমাদের ভবনের ভাড়াটে মাবিয়া সুলতানা, তাঁর পরিচিত দুজন মোসলেম উদ্দিন ও সুমন রবিদাসকে গ্রেপ্তার করে।

এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুপচাঁচিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত কুমার সিংহ বলেন, আসামি মোসলেম উদ্দিন গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একই আদালত মাবিয়া ও সুমনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে আজ তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।

এর আগে ১০ নভেম্বর দুপুরে চারতলা বাড়ির তিনতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে সালমার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি দুপচাঁচিয়া ডিএস ফাজিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী। তাঁরা ভবনটির মালিক। সালমাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে র‍্যাব ঘটনার পরের দিন ওই দম্পতির ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুরকে (১৯) আটক করে।

গত মঙ্গলবার সালমার বড় ছেলে নাজমুস সাকিব বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ওই দিনই দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব-১২-এর বগুড়া ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মো. এহতেশামুল হক খান দাবি করেন, সালমার ছোট ছেলে সাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

কিন্তু তদন্তে ভিন্ন তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে বগুড়া আদালতের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, আসামি মোসলেম আদালতে যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তাতে বলেছেন, চারতলার ভাড়াটিয়া মাবিয়া সুলতানার বাসায় বিভিন্ন লোক যাতায়াত করতেন। এতে বিরক্ত হয়ে সালমা মাবিয়াকে বাসা ছাড়তে বলেছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মোসলেম উদ্দিন ও সুমন রবিদাসকে নিয়ে সালমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মাবিয়া। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সালমাকে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে রেখে প্রধান ফটকে তালা দিয়ে চলে যান আসামিরা। সালমার বাসার চাবি রেখে দেন মাবিয়া। আর ওই বাসা থেকে খোয়া যাওয়া মুঠোফোন, ইন্টারনেট সেবায় ব্যবহৃত রাউটার মোসলেম নিজের কাছে রাখেন। ইতিমধ্যে এসব আলামত জব্দ করা হয়েছে।