হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার, শাশুড়ি গ্রেপ্তার

মরদেহপ্রতীকী ছবি

জামালপুরের বকশীগঞ্জে এক গৃহবধূকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে তাঁর শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার বগারচর ইউনিয়নের নামাপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই গৃহবধূর স্বামী পলাতক।

এর আগে গতকাল বিকেলে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আয়শা আক্তার (১৮) নামের ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি বগারচর ইউনিয়নের নামাপাড়া গ্রামের জাহীনুর ইসলামের স্ত্রী। আয়শার বাবার বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে শাশুড়ি জাহানারা বেগমকে (৪০)।

স্থানীয় কয়েক বাসিন্দা জানান, জাহীনুর এর আগেও একটি বিয়ে করেছিলেন। সম্প্রতি প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর আয়শাকে বিয়ে করেন। আয়শা দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের বাঘারচর গ্রামের মৃত ছামেদ আলীর মেয়ে।

আয়শার পরিবারের কয়েকজন সদস্য জানান, গতকাল দুপুরে হঠাৎ জানানো হয় আয়শা অসুস্থ। খবর পেয়ে আয়শার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, সেখানে কেউ নেই। পরে প্রতিবেশীদের কাছে খোঁজখবর নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান তাঁরা। সেখানে গিয়ে তাঁরা আয়শার মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ থানা-পুলিশ সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

আয়শার মা শহরবানু মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাইয়্যার শউরির (শাশুড়ি) মইধ্যে ঝামেলা আছে। মাইয়্যা ম্যালাবার কইছে, শউরি জ্বালায় অনেক।’ কী কারণে জ্বালাতন করতেন, এমন প্রশ্নের জবাবে শহরবানু বলেন, ‘ওইডা তো জানি নে, তবে বিয়ার পর এডা (একটি) গরুর দেওনের কথা আছিল। হেই গরুডা এহোনো দিতে পারি নাই। আমার মাইয়্যা ধার্মিক আছিল, মাদ্রাসায় পড়ত। সে আত্মহত্যা কত্তে পারে না। আমার মাইয়্যারে খুন করে হয়তো ফাঁসিত ঝুলাইয়্যা রাখছিল ওরা। এই খুনের বিচার চাই আমি।’

এ ঘটনায় গতকাল রাতেই বকশীগঞ্জ থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আয়শার শাশুড়ি জাহানারাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকেই গৃহবধূর স্বামী জাহীনুর পলাতক। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। আর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। যেহেতু বিয়ের মাত্র চার সপ্তাহের মধ্যে এ ঘটনা ঘটছে, এর মানে এতে কোনো রহস্য আছে।’