চট্টগ্রামে বিএনপির নেতা আমীর খসরুসহ চার নেতার বাসায় হামলা, আগুন
চট্টগ্রামে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, নগর কমিটির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনসহ চার নেতার বাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাসার নিচে থাকা গাড়িও। আজ শনিবার রাত আটটা থেকে নয়টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির নেতাদের দাবি, ছাত্রলীগ–যুবলীগ এ হামলায় জড়িত।
শাহাদাত হোসেন রাতে প্রথম আলোকে বলেন, নগরের বাদশা মিয়া সড়কের তাঁর বাসায় ছাত্রলীগ, যুবলীগের শতাধিক কর্মী এসে ভাঙচুর চালান। বাসার দরজা তাঁরা ভেঙে ফেলেন। ভাঙচুর করেন বাসার জিনিস। বাসায় তাঁর অসুস্থ মা রয়েছেন। ঘটনার সময় তিনি (শাহাদাত) বাসায় ছিলেন না। হামলাকারীরা বাসার নিচে পার্ক করা ১০–১২টি গাড়িও আগুনে পুড়িয়ে দেন। গাড়িগুলো ভবনের অ্যাপার্টমেন্টে থাকা চিকিৎসক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার লোকজনের। আগুনে অ্যাপার্টমেন্টে থাকা লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। শাহাদাত হোসেন আরও বলেন, ‘আমি কিছুর মধ্যে ছিলাম না। আমার বাসায় কেন হামলা করল, বুঝলাম না।’
শাহাদাতের বাসার পর নগরের পাঁচলাইশ এলাকায় নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর বাসায়ও হামলা চালানো হয়। নগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা ইদ্রিস আলী প্রথম আলোকে বলেন, এরশাদ উল্লাহর বাসায় হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ–যুবলীগ।
রাত নয়টার দিকে নগরের মেহেদীবাগ এলাকায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বাসায় হামলা ও আগুন দেওয়া হয়। ওই সময় নগরের গোলপাহাড় থেকে মেহেদী পর্যন্ত এলাকায় দফায় দফায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। ঘটনার সময় বাসায় থাকা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছোট ভাই আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাই কারাগারে (আমীর খসরু)। তিনি কোনো কিছুর সঙ্গে জড়িত নন। এরপরও আমাদের বাসায় ঢুকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা, ভাঙচুর করে গাড়িতে আগুন দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি।’
নগরের চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়ালী উদ্দিন আকবর রাতে প্রথম আলোকে বলেন, আমীর খসরুর বাসার সামনে গাড়িতে আগুন দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে।
বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দিন রাতে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের নগরের চট্টেশ্বরীর বাসায় ছাত্রলীগ–যুবলীগের লোকজন হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন। বাসায় দরজায় কোপ দেন। কিন্তু ভেতরে ঢুকতে পারেননি। বাসার দরজার সামনে থাকা দুটি পাজেরো গাড়ি ও জানালার কাচ ভাঙচুর করেন। ওই সময় বাসায় তাঁর বাবা মীর নাছির উদ্দিন ছিলেন।
হামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির নেতাদের বাসায় আগুন দেওয়ার সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কেউ জড়িত নন। তাঁরা এখন মহিউদ্দিন চৌধুরীর (শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাসা) বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাঁদের নেতার বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আর সাংগঠনিকভাবে কোনো ধরনের সংঘর্ষে জড়ানোর পক্ষে নন তাঁরা।
উল্লেখ্য, এর আগে সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের চশমা হিলের বাসায় ভাঙচুর, আওয়ামী লীগের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বহদ্দারহাটের বাসায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর লালখান বাজারের নিজের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়।