চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলবে ১৮ ও ক্লাস শুরু ১৯ আগস্ট

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হলছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলবে আগামী ১৮ আগস্ট। এর পরের দিন  ক্লাস শুরু হবে। ১৬ আগস্ট থেকে নিয়মিত সূচিতে চলবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের অন্যতম বাহন শাটল ট্রেন।

বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শুরু হওয়া এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। অনলাইনে (জুম মিটিং) প্রায় তিন ঘণ্টার এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদেরও চিকিৎসা খরচ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভা শেষে সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে ওঠা নিয়ে সিন্ডিকেট সভায় অংশগ্রহণকারী একজন জানান, আবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। আবেদনের ভিত্তিতে বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষার্থীরাই কেবল হলে ওঠার সুযোগ পাবেন।

সভায় অংশগ্রহণকারী সিন্ডিকেট সদস্যরা জানান, আগামী ১০ থেকে ১৪ আগস্টের মধ্যে হলে সিটের জন্য শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হবে। ১৭ আগস্ট হলের আসন বরাদ্দ দেওয়া হবে। বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষার্থীরা ১৮ আগস্ট হলে উঠবেন।  

ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীদের স্থায়ী ঠিকানার দূরত্ব ও পরীক্ষার ফলাফল যাচাই করে এই বরাদ্দ দেওয়া হবে। যেসব শিক্ষার্থী আগে আবেদন করেছে তাঁদেরও নতুন করে আবেদন করতে হবে। তবে শিক্ষার্থীদের নতুন করে ফি দিতে হবে না৷

জানতে চাইলে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক শামিম উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বহিরাগতরা কেউ ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবে না। এটা সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি ক্যাম্পাস থেকে বন্ধ করতে হবে। এই বিষয়টা ধীরে ধীরে কার্যকর করা হবে।’

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে গত ১৭ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ওই দিনই সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ছাত্রীদের ও রাত ১০টার মধ্যে ছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষের হল ছাড়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রীরা বিক্ষোভ করেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ছাত্রীদের জোর করে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নথি অনুসারে, বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২৭ হাজার ৩৩০ জন। এসব শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য হল রয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে চালু আছে ১২টি। চালু থাকা হলের মধ্যে ছাত্রদের ৭টি, বাকি ৫টি ছাত্রীদের। ছাত্রীদের হলে বরাদ্দ প্রক্রিয়া চলমান। নিয়ম মেনে ছাত্রদের হলগুলোতে সর্বশেষ ২০১৭ সালের জুনে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালে কর্তৃপক্ষ আসন বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি দেয়। সে বার প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন। এ ছাড়া ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর আবেদন করেন ১ হাজার ৬০ শিক্ষার্থী। আবেদন করলেও শিক্ষার্থীরা বৈধভাবে হলে উঠতে পারেননি।