এ কে আজাদের প্রস্তাবের জবাবে শামীম হক বললেন, ‘আপনি তো বিরোধী দল’
ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য এ কে আজাদের ‘ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ করার’ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক। তিনি এ কে আজাদকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘একটি পত্রিকায় দেখেছি, আপনি বলেছেন, আসেন একসঙ্গে মিলেমিশে কাজ করি। আপনার সঙ্গে মিলেমিশে কী কাজ করব? আপনি তো বাংলাদেশ সরকারের কোনো অংশ নন। আপনি তো বিরোধী দল। আপনি কী উন্নয়ন করবেন?’
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে শামীম হক এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার পঞ্চমবারের মতো শপথ নেওয়ার পর জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এক আনন্দমিছিল শেষে এই সমাবেশ হয়।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এ কে আজাদের কাছে পরাজিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থী শামীম হক। নির্বাচনে জয়ের পর ৯ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলেনে এ কে আজাদ বলেছিলেন, ‘শামীম হক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমার ভাই। আমি এখনো তাঁকে অনুরোধ করছি সব ভেদাভেদ ভুলে আসুন আমরা একসঙ্গে ফরিদপুর উন্নয়নে কাজ করি। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। ভোটে হেরে কাউকে দোষারোপ না করে আসুন আমরা একসঙ্গে কাজ করি।’
শেখ হাসিনার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ফরিদপুরে উন্নয়ন হবে উল্লেখ করে গতকালের সমাবেশে শামীম হক বলেন, ‘মানুষের জন্য যে ওয়াদা দিয়েছেন, এই ওয়াদা কিন্তু আপনাকে (এ কে আজাদ) পালন করতে হবে। ওই ওয়াদা পালন আপনি কিন্তু করতে পারবেন না। তখন দেখবেন কেমন লাগে। আপনার যা আছে, তা বেইচাও এ ওয়াদা পূরণ করা যাবে না।’
এ কে আজাদকে উদ্দেশ্য করে শামীম হক আরও বলেন, ‘আপনি যা হইছেন হইছেন। যেহেতু মহান সংসদে আপনাকে শপথ পড়ানো হয়েছে। আপনি এমপি (সংসদ সদস্য) সব ঠিক আছে। যদি পারেন আপনি আপনার ওয়াদা পূরণ করেন। যদি কেউ উপকৃত হয়, সে তো আমাদের ফরিদপুরের লোকই উপকৃত হবে। ওয়াদাটা রাইখেন। রাখতে পারবেন কি না, জানি না।’
নির্বাচনে এ কে আজাদের ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮ ভোটের বিপরীতে ৭৫ হাজার ৮৯ ভোট পাওয়া শামীম হক ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘যাঁরা আমাকে ৭৬ হাজার ভোট দিয়েছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগের সব ডেডিকেটেড (নিবেদিতপ্রাণ) কর্মী। তাঁরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন।’
‘তথাকথিত বিজয়ের’ পর আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে শামীম হক বলেন, ‘এগুলো বাদ দেন। ফরিদপুর শহর খুব শান্ত শহর। অশান্ত করার অনেক পাঁয়তারা করছেন, অনেক উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। যাঁরা দিচ্ছেন, তাঁরা এই বক্তৃতা এখনই বন্ধ করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কর্মীদের গায়ে হাত দেওয়া হলে আমরা ঘরে বসে থাকব না।’
নির্বাচনে প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করে সমাবেশে বক্তব্য দেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে যাঁরা কারসাজি করেছেন, সরকারি এবং বেসরকারি যাঁরা আছেন, তাঁদের আমরা দাতভাঙা জবাব দেব। সবাইকে এর জন্য কৈফিয়ত দিতে হবে, কেউ বাঁচতে পারবেন না। চক্রান্ত করে কেউ টিকে থাকতে পারে না। তাঁদের পতন অতি নিকটে।’