সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অনশন
সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জামালপুরের বকশীগঞ্জে অনশন কর্মসূচি চলছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার থেকে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের ফটকের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু হয়। এই অনশন চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এতে উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিক, সচেতন নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিচ্ছেন।
গোলাম রব্বানি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলার সংবাদ সংগ্রাহক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। গত ১৪ জুন রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফেরার সময় বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলমের নেতৃত্বে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। ঘটনার পরদিন দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর ১৭ জুন সাংবাদিক গোলাম রব্বানি হত্যার ঘটনায় তাঁর স্ত্রী মনিরা বেগম বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলমকে। তাঁর ছেলে ফাহিম ফয়সাল ওরফে রিফাত এই মামলার ২ নম্বর আসামি। এ ছাড়া আরও ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয় মামলায়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ২০ থেকে ২৫ জনকে। ঘটনার পরপরই এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু মামলা হওয়ার পর গত এক মাসে বাকি ১৭ জনের কাউকেই ধরতে পারেনি পুলিশ। এখন পর্যন্ত আলোচিত হত্যা মামলাটিতে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের এক মাস পূর্তিতে আয়োজিত অনশন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সাংবাদিক মো. শাহজামাল, শাহীন আল আমিন, জি এম ফাতিউল হাফিজ, জি এম সাফিনুর ইসলাম, এইচ এম মুছা আলী, এমদাদুল হক প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, হত্যার ঘটনায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছিল। মামলা হওয়ার আগেই আটক হয়েছিলেন এজাহারভুক্ত ৫ আসামি। কিন্তু মামলা হওয়ার পর গত এক মাসে বাকি ১৭ জনের কাউকেই ধরতে পারেনি পুলিশ। এতে সবার মধ্যে নানা রকম প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলমের ছেলে ফাহিম ফয়সাল ওরফে রিফাতকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এখনো ধরতে পারছেন না। তিনি তো (রিফাত) দেশ ছেড়ে চলে যাননি। তাহলে তাঁকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? এসব প্রশ্ন এখন সবার। শুধু তা-ই নয়। এজাহারে থাকা অন্য ১৭ আসামি এক মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি। প্রধান আসামি ও তাঁর ছেলেসহ সব আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দিতে হবে। তাঁদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেওয়া হয় অনশন থেকে।
পুলিশ সূত্র জানায়, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গত ১৫ ও ১৬ জুন হত্যায় জড়িত ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। মামলা হওয়ার আগে ১৭ জুন সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে মাহমুদুলসহ তিনজনকে আটক করে র্যাব। ওই সময় প্রধান আসামিসহ সব মিলিয়ে ১৩ জন আটক হন। পরে সবাইকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। মামলা হওয়ার পর বিভিন্ন সময় আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে সর্বশেষ গত বুধবার একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা কেউই এজাহারভুক্ত আসামি নন। এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে প্রধান আসামিসহ তিনজন আদালতের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।