যাঁদের সন্দেহ হবে, প্রকাশ্যে ভোট দিতে হবে—হুমকি আওয়ামী লীগ নেতার
নৌকায় ভোট না দিলে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নেই এবং যাঁদের সন্দেহ হবে, তাঁদের প্রকাশ্যে ভোট দিতে হবে বলে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ভোটারদের হুমকি দিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। ওই ব্যক্তি হলেন শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুর সবুর মোল্যা। তিনি কাশিমাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে কাশিমাড়ী ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর-কালীগঞ্জ আংশিক) আসনের নৌকার প্রার্থী এস এম আতাউল হকের প্রচারণায় এ ধরনের বক্তব্য দেন আবদুর সবুর মোল্যা। তাঁর বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
নতুন বাজার এলাকার কারিগর পাড়ায় অনুষ্ঠিত নৌকার উঠান বৈঠক হয়। সেখানে আবদুস সবুর মোল্ল্যা ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ‘সকাল বেলা উঠে আল্লাহর নাম করে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। কোনো সমস্যা হলে আমি সেখানে আগে থাকব। মা-বোনেদের জন্য আলাদা জায়গা আছে, সেখানে যাঁরা যাঁরা যাবেন, সবার দাওয়াত দিচ্ছি। ৭ তারিখে ভোট দিতে যাবেন নৌকা মার্কায়। আর যাঁরা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন না, দয়া করে ওই দিকে যাওয়ার দরকার নেই। একদম স্পষ্ট কথাবার্তা। যাগা (যাঁদের) সন্দেহ হবে আমার, তাগা (তাঁদের) কিন্তু ভোট টেবিলে মারতে হবে। এমনি গোপনে মারতে দেব না। আর যাঁদের সন্দেহ হবে না, তাঁরা গোপনে মারবে। এর বিকল্প কিছু হবে না আমাদের ৮ নম্বর কেন্দ্রে, অন্তত আমি বেঁচে থাকতে।’
এ সময় ওই উঠান বৈঠকে কাশিমাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, গোবিন্দপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ জি এম শফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী এইচ এম গোলাম রেজা (নোঙ্গর প্রতীক) সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এভাবে প্রকাশ্যে ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন করছেন নৌকার কর্মী-সমর্থকেরা। সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছেন তাঁরা। অবশ্যই নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিকে এই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আবদুস সবুর মোল্যার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ওসব মিটে গেছে। ভুল হতে পারে বলেই তিনি মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।