তিন দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা। আজ রোববার সকাল আটটা থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন, পরিবহন ও বিক্রয় বন্ধ রেখেছেন তাঁরা। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা নগরের খালিশপুরে ট্যাংকলরি ভবনে আয়োজিত এক সভা থেকে সারা দেশে ওই ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, বাংলাদেশ ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতি যৌথভাবে ওই ধর্মঘট পালন করছে।
জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের তিন দফা দাবি হলো—জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংকলরির অর্থনৈতিক জীবনকাল ৫০ বছর করা, জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট বিধায় প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করা।
প্রায় দেড় মাস আগে গত ২৪ জুলাই ঢাকায় এক সভা থেকে ওই তিন দফা দাবি ঘোষণা করেছিলেন জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা। দাবি বাস্তবায়নে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি মেনে না নেওয়ায় আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছেন তাঁরা।
এদিকে গতকাল শনিবার রাত আটটার পর থেকেই খুলনা নগরের তেলপাম্পগুলো থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়ে শত শত যানবাহন। প্রতিটি পাম্পে মোটরসাইকেল ও গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা যায়।
বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি গফ্ফার বিশ্বাস আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর কমিশন বৃদ্ধিসহ ৩ দফা দাবি পূরণে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকার তাঁদের দাবি মেনে নেয়নি। এ কারণে আজ সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল উত্তোলন, পরিবহন ও বিক্রয় বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে একই এবং যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন তাঁরা।
গফ্ফার বিশ্বাস বলেন, সরকার চার বছর ধরে কয়েকবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। প্রতিবারই সময় নিয়েছে, কিন্তু তাঁদের দাবি বাস্তবায়ন করেনি। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁদের তেল উত্তোলন, পরিবহন ও বিক্রয় বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করতে হচ্ছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ ট্যাংকলরি মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় মহাসচিব ফরহাদ হোসেন সকালে প্রথম আলোকে বলেন, সকাল আটটা থেকে সারা দেশে একযোগে ধর্মঘট শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জ্বালানি তেল পরিবহন বন্ধ থাকবে।