ওসমানী মেডিকেল দুই মামলার সব আসামি গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত
সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে আন্দোলন অব্যাহত আছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ও হৃদ্রোগ বিভাগ কর্মবিরতির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত সবাই গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
গত শনিবার হাসপাতালে কর্তব্যরত এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর স্বজন পরিচয়দানকারী কয়েক তরুণের বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এ সময় শিক্ষানবিশ চিকিৎসকেরা একত্র হয়ে একজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত সোমবার রাতে মেডিকেল কলেজের দুই ছাত্রের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। ছাত্রের ওপর হামলার ঘটনার পর থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এলাকা উত্তাল হয়ে ওঠে।
একপর্যায়ে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা সহপাঠীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার রাতে বিক্ষোভ করে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরে সেটি পাঁচ দফা দাবিতে পরিণত হয়। দাবিগুলোর মধ্যে মেডিকেল কলেজ এলাকায় স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, নিরাপত্তা জোরদার, হামলাকারীদের শনাক্ত ও হামলার ঘটনায় মামলা, জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারের দাবি।
শিক্ষার্থী ও শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের দাবিগুলোর মধ্যে অধিকাংশই পূরণ করার কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার সকালেই হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা মেডিকেল এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের জন্য স্থান নির্ধারণ করেছেন। হামলাকারীদের শনাক্ত করে দুটি মামলাও করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, পুলিশ প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতারা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাসে দেওয়া হলেও তাঁরা সব আসামিকে গ্রেপ্তারের আগপর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
ওসমানী মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্য দৃশ্যমান উদ্যোগ না নেওয়া পর্যন্ত এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সবাইকে গ্রেপ্তারের আগপর্যন্ত ধর্মঘট কর্মসূচি চলবে।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, দুই মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনকে আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলমান রয়েছে।