মাগুরায় সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে ছাত্রলীগের মামলা
মাগুরায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় দলটির ৩৬ জন নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছেন ছাত্রলীগের এক নেতা। আসামিদের মধ্যে জেলা ছাত্রদল ও যুবদলের পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা আছেন।
আজ রোববার মাগুরা সদর থানায় আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ মোল্লা (২৩) বাদী হয়ে বোমা হামলা, ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগে এই মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শোকের মাস উপলক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ছাত্রলীগের একটি মিছিল দলীয় কার্যালয় থেকে ভায়নার মোড় হয়ে ইটখোলার দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি সদর উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছালে উল্টো দিক থেকে আসা বিএনপির মিছিল থেকে লাঠি, রামদা, চায়নিজ কুড়াল, লোহার রডসহ অন্যান্য দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের পাশাপাশি তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। হামলায় ছাত্রলীগের তিন কর্মী আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় গতকাল ঘটনাস্থল থেকেই সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন রানা, জেলা যুবদলের সহসভাপতি কামরুজ্জামান ফিরোজ, শহরের মোল্লা পাড়ার মো. আরিফুজ্জামান রাজা মোল্লা, সাখাওয়াত হোসেন সাকু, পারনান্দুয়ালী গ্রামের মাহফুজুর রহমান তিতাস ও মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা গ্রামের আবুল বাসার রিপন মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ। আজ ছাত্রলীগ নেতার করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বিএনপির নেতারা অবশ্য দাবি করেছেন, গতকাল জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সদর উপজেলা ও পৌর বিএনপির ডাকা শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন। বোমা হামলাসহ অস্ত্র প্রদর্শনের যে অভিযোগে বিএনপির নেতাদের নামে মামলা, সেই ঘটনাগুলো ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরাই ঘটিয়েছেন। তবে আজ বিকেল পর্যন্ত ওই ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো মামলা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাগুরা সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. কুতুব উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অস্ত্রের মহড়া দিয়ে, বোমা ফাটিয়ে সমাবেশে হামলা করল তারা; অথচ মামলা দিচ্ছে আমাদের নামে। হামলা চালিয়ে আমাদের মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি দলীয় কার্যালয় ও কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করেছে। দলীয় নেতা–কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা মামলার সিদ্ধান্ত নেব।’
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার ছয়জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ ঘটনায় আর কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি।