জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি কোটা বাতিলসহ চার দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় ভিসি কোটা বাতিল, পোষ্য কোটার যৌক্তিক সংস্কার, অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা ও আবেদন ফি কমানোর চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন একদল শিক্ষার্থী। আজ রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ‘গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আবেদন কার্যক্রম আগামী ১ জানুয়ারি শুরু হয়ে চলবে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবারের পরীক্ষায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনি কোটা বাতিল করা হয়েছে।
মানববন্ধনে নগর ও অঞ্চল–পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসানের সঞ্চালনায় সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন, ইতিহাস বিভাগ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) শাকিল আলী, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম, গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জিয়া উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশে কোনো ধরনের ভিসি কোটার আইন নেই। দেশের চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর ছাড়া অন্য কোথাও ভিসি কোটা নেই। পোষ্য কোটায় মাত্র ২৬ নম্বর পেয়ে ভর্তির সুযোগ পান। এই কোটার যৌক্তিক সংস্কার করে ন্যূনতম পার্সেন্টেজ মার্ক রাখতে হবে, যাতে অন্তত পাস করে ভর্তির সুযোগ পান। ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে যে বৈষম্যের জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধরা জীবন দিয়েছেন, সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বলে দিতে চান, বৈষম্যমূলক এই কোটা বাতিল না করা হলে তাঁরা কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
মানববন্ধনে ইতিহাস বিভাগ ছাত্র সংসদের ভিপি শাকিল আলী বলেন, ‘যাদের টাকা আছে, তারা একটা হ্যালোর মাধ্যমে ভিসি কোটায় ভর্তি হচ্ছে। এটার কোনো দরকার নেই। ভিসি কোটা একটা অযৌক্তিক কোটা, অথর্ব কোটা। আমরা দেখেছি, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়ে মাদক, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত ছিল। তার মতো অসংখ্য শিক্ষার্থী পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে গেছে। এটার অবিলম্বে যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে। যেখানে বিসিএসের মতো পরীক্ষায় আবেদন ফি ২০০ টাকা, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন ফি ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ বছরই এটাকে কমিয়ে যৌক্তিক ফি নির্ধারণ করতে হবে।’
আবদুর রশিদ বলেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যমূলক কোটা দূর করতে আন্দোলন করছেন। প্রশাসন বিভিন্ন সময় মৌখিক আশ্বাস দিলেও এখনো প্রশাসনিকভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করেনি। তাঁদের খুবই কষ্ট লাগে, যখন গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে এসে এসব কোটার জন্য আবার দাঁড়াতে হয়। তাঁরা দ্রুত এ কোটা বাতিলের দাবি জানান।