মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যুতে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি ও আ.লীগের নেতাদের শোক
শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যুতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন। ৮২ বছর বয়সী মতিয়া চৌধুরী বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-২ আসনে মতিয়া চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী ফাহিম চৌধুরী। মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যুতে তিনি বলেন, ‘আমরা একজন প্রবীণ নেত্রীকে হারালাম। উনি আমারা বাবা (সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম জাহেদ চৌধুরী) সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। বলতে গেলে আমিও ওনার কাছ থেকে রাজনৈতিকভাবে অনেক কিছু শিখেছি। তাঁর মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত।’
নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, মতিয়া চৌধুরী নকলা-নালিতাবাড়ীর উন্নয়নের রূপকার ছিলেন। নালিতাবাড়ী-নকলা উপজেলায় দৃশ্যমান যত উন্নয়ন হয়েছে, সবকিছু তাঁর হাত দিয়েই হয়েছে। তিনি দুই উপজেলায় আওয়ামী লীগের অভিভাবক ছিলেন। অভিভাবকের মৃত্যুতে তাঁরা গভীরভাবে শোকাহত।
নালিতাবাড়ী শহর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শফিকুল ইসলাম মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বলেন, ‘বর্ষীয়ান এই নেত্রীর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও বাঘবেড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সবুর বলেন, ‘তাঁর উন্নয়নের কথা সারা জীবন মানুষ মনে রাখবেন। ওনার মতো এমন একজন বর্ষীয়ান নেতা আর জন্ম হবে কি না, সন্দেহ আছে। তাঁকে একনামে সারা দেশ চেনে। তাঁর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘অগ্নিকন্যা’ হিসেবে পরিচিত মতিয়া চৌধুরীর জন্ম পিরোজপুরে ১৯৪২ সালের ৩০ জুন। তাঁর বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা ও মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক নকলা উপজেলার বাসিন্দা প্রয়াত বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মতিয়া চৌধুরী।
মতিয়া চৌধুরী ১৯৯১ সালে শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে প্রথম নির্বাচন করেন। তিনি শেরপুর-২ আসন থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৬ ও ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে তিনি সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকার পতনের আগপর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন।