সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঝিনাইদহ পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইদুল করিমকে (মিন্টু) আটকের বিষয়ে নেতা-কর্মীরা কিছুই বলছেন না। ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগের রাজনীতির নেতৃত্বে থাকা সাইদুল করিম ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে মাঠপর্যায়ের রাজনীতি শুরু করেন।
সাইদুল করিমের আটকের ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অনেক নেতা-কর্মীর সমাগম হয়। কিন্তু কোনো নেতা-কর্মীই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, এখনই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদককে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।
কে সাইদুল করিম
সাইদুল করিম ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার জোড়াদাহ ইউনিয়নের ভায়না বিশ্বাসপাড়ার বাসিন্দা। ওই এলাকার প্রয়াত রুহুল কুদ্দুস ও আঙ্গুরা বেগম দম্পতির সন্তান। জন্ম ১৯৬৪ সালের ২ জুন। বর্তমানে ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর ইন্দিরা সড়কের বাড়িতে স্ত্রী আর্মিজা শিরিন আক্তার ও দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস করেন। স্ত্রী আর্মিজা শিরিন আক্তার স্থানীয় একটি পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক এবং সাইদুল করিম সেই পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি।
যেভাবে রাজনীতিতে
ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি সাইদুল করিমের। ঝিনাইদহে দীর্ঘদিন দাপটের সঙ্গে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন। ১৯৭৮ সালে ঝিনাইদহ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এরপর ১৯৮৩ সালে জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে ভারমুক্ত হয়ে পূর্ণ সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৮৯ সালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক নির্বাচিত হন।
১৯৯৭ সালে ছাত্রলীগের সক্রিয় সাবেক কর্মীদের নিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন তিনি। ১৯৯৯-২০০০ সালে জেলার সব সহযোগী সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে শ্রমিক লীগ গঠনে উদ্যোগী হন। এরপর ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
২০১১ সালের ১৩ মার্চ ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচনে সাইদুল করিম মেয়র নির্বাচিত হন। আইনগত জটিলতায় নির্বাচন না হওয়ায় এরপর ২০২২ সাল পর্যন্ত টানা ১১ বছর তিনি এই পদে ছিলেন।
ঝিনাইদহে নিরাপত্তা জোরদার
আনোয়ারুল আজীম হত্যাকাণ্ডে সাইদুল করিম আটক হওয়ার পর ঝিনাইদহ জেলা শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল থেকে শহরের পায়রা চত্বর, পোস্ট অফিস মোড়, মুজিব চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, সংসদ সদস্য হত্যার মামলাটি ঢাকার পুলিশ তদন্ত করছে। যেহেতু সাইদুল করিম মিন্টু আটকের ঘটনাটি ঢাকায় ঘটেছে। সেই হিসাবে জেলা শহরে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের টহলও বাড়ানো হয়েছে।