কুড়িগ্রামে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে আ.লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজভি কবির চৌধুরী ওরফে বিন্দুর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা সদরের খলিলগঞ্জ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আওয়ামী লীগ নেতার নাম শরিফুল ইসলাম ওরফে সোয়ান (৪৪)। তিনি শহরের ঘোষপাড়ার আমজাদ হোসেন বুলুর ছেলে। শরিফুল কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য ছিলেন। গাড়িতে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানিয়েছেন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রেজভি কবির কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার খেজুরেরতল (চৌধুরীপাড়া) গ্রামের বিপুল চৌধুরীর ছেলে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন নয়নের অনুসারী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের বন্ধু রেদওয়ান মাহমুদ জানান, শরিফুলসহ তাঁরা তিন বন্ধু শহরের অভিনন্দন কনভেনশন সেন্টারে সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁদের গাড়ির সামনে এসে পড়ে। মোটরসাইকেলে ছাত্রলীগের দুজন কর্মী ছিলেন। তাঁদের উদ্ধার করে তাঁরা কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। আহত ওই দুই কর্মীর মাধ্যমে খবর পেয়ে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজভি কবির তাঁদের গাড়ির গতিরোধ করেন। একপর্যায়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁরা হামলা করেন। একপর্যায়ে শরিফুল ঘটনাস্থলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কামরুন্নাহারের বরাত দিয়ে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই ব্যক্তিকে জরুরি বিভাগে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত পান। তাঁর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির প্রস্তুত করবে পুলিশ।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রেজভি কবিরকে ইতিমধ্যে আটক করেছে পুলিশ। অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ব্যক্তিগত কাজে তিনি ঢাকায় আছেন। ঘটনা শুনেছেন। রেজভির সঙ্গে একবার কথা হয়েছে। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঘটনায় রেজভি কিংবা ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী জড়িত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দুই ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রেজভি কবিরসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। আটক অন্যজন হলেন কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ঝিনুক মিয়া। লাশের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সুরতহাল প্রতিবেদন আমার হাতে আসেনি। আমরা কাজ করছি।’
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা নিহতের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁর বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা। তাঁরা অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।