দেশে চালের কোনো অভাব নেই: খাদ্যমন্ত্রী

সারা দেশে খাদ্যবান্ধব ও খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) কর্মসূচি উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমজদার। আজ বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে
ছবি প্রথম আলো

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে চালের কোনো অভাব নেই। বর্তমানে সর্বকালের সর্বোচ্চ পরিমাণ সরকারি চাল মজুত আছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, চাল নিয়ে খেলতে যাবেন না। আগুনে হাত দেবেন না, তাহলে হাত পুড়ে যাবে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দেশব্যাপী খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও নগরের চাষাঢ়ায় ওএমএস কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাখাওয়াত হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, দেশে চালের কোনো অভাব নেই। এ কারণে আমরা এত চাল একসঙ্গে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ৬০ হাজার মেট্রিক টন, ওএমএস ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন করে চাল মার্কেটে ছেড়েছি। এতে চালের বাজারে এ প্রভাব তো পড়বেই। আমরা বলতে চাই, অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে, চাল নিয়ে কোনো খেলা খেললে আমরা সব সময় প্রস্তুত আছি।’

খাদ্যমন্ত্রী জানান, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে একসঙ্গে ৮১৩ থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৩৬০ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগে একজন ডিলার এক টন পেতেন, এখন তাঁরা বাড়িয়ে প্রত্যেক ডিলারকে দুই টন চাল দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ পরিবার ৩০ কেজি করে ১৫ টাকা দরে এ চাল কিনতে পারবে।’

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়, তাহলে দেশ ও দেশের জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যাঁরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন, তাঁরা দেশকে ভালোবাসেন না। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করতে দেওয়া হবে না। এই চাল বিক্রি করার চেষ্টা করা হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, ‘সরকারিভাবে দেওয়া চাল একটু মোটা হলেও আয়নার দানার মতো। এ চাল খেয়েই তো আমরা সারা জীবন কাটিয়েছি। আজকে ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে বলে মানুষ সরু চাল নাজিরশাইল কিনে খাচ্ছে, এটা দোষের কিছু নয়।’

মন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা শুধু খুচরা বাজার নয়, মিল গেট, আড়তদার—সব জায়গায় খেয়াল রাখবেন, চাল নিয়ে কেউ যাতে কোনো কারসাজি করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শুল্কমুক্ত করে দিয়েছি, যাতে কেউ যেন কারসাজি করতে না পারে। বেসরকারিভাবে আজ থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। আপনারা এসব মনিটরিং করে দেশ গড়ার আরেকটি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারেন।’

খাদ্যমন্ত্রী ডিলারদের উদ্দেশে বলেন, ‘যদি আপনাদের কাছে ৫০ কেজি চালও অবশিষ্ট থাকে, তাহলে সেটি পরদিন উত্তোলন করে চালের সঙ্গে যুক্ত করে ভোক্তাদের দিতে হবে। কখনোই নিজের মনে করবেন না। এ চাল কোনোভাবেই বাজারে বিক্রি করা যাবে না। এ চাল খোলাবাজারে বিক্রি ও অনিয়মের সঙ্গে যে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’