চোখ কিনতে চায় পাখির ঠোকরে চোখ হারানো শিশু আলিফ
‘“বাবা, চলো আমরা চোখ কিনা নিয়া আসি। আমারে চোখ কিনা দাও।” ও (ছেলে) এই রকম কথা মাঝেমধ্যেই বলে। মনে খুবই কষ্ট হয়। কাউকে বোঝাতে পারি না।’ কথাগুলো টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ছিটমামুদপুর গ্রামের আমিনুল হোসেনের। গত বছর পাখির ঠোকরে বাঁ চোখে মারাত্মক আঘাত পায় তাঁর শিশুসন্তান তানজিদ মোহাম্মাদ আলিফ। চিকিৎসার পরও চোখটি আর সেরে ওঠেনি।
তিন বছরের সন্তানের চোখ ভালো হওয়ার আশায় আছেন মা দোলন আক্তারও। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মির্জাপুর প্রেসক্লাবে তাঁদের সঙ্গে কথা হয়। ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দেওয়া অনুদানের চেক নিতে সেখানে আসেন তাঁরা।
গত বছরের ১৯ অক্টোবর বাড়ির পাশে বিলে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যান আমিনুল হোসেনের বাবা শুকুর সিকদার। মাছের পরিবর্তে একটি পাখি বড়শির টোপটি গিলে ফেলে। পরে বড় আকারের পাখিটি নিয়ে নিজের বাড়ি ফিরে উঠানে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন শুকুর। এ সময় পাখিটিকে দেখে শিশু আলিফ কাছাকাছি যায়, পাখিটি তখন তার চোখে ঠোকর দেয়।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ২১ অক্টোবর ছেলের চোখে অস্ত্রোপচার হয়। তবে কয়েক দিন পর তার চোখে নানা জটিলতা দেখা দেয়। তখন চিকিৎসক জানান, আলিফ ওই চোখে আর দেখতে পারবে না।
শিশুটির মা দোলন আক্তার বলেন, ছেলে এমনি ব্যথা পেয়েছে ভেবে খুব একটা গুরুত্ব দেননি। পরে দেখেন, চোখ থেকে রক্ত বের হচ্ছে। তখন আলিফকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ২১ অক্টোবর ছেলের চোখে অস্ত্রোপচার হয়। তবে কয়েক দিন পর তার চোখে নানা জটিলতা দেখা দেয়। তখন চিকিৎসক জানান, আলিফ ওই চোখে আর দেখতে পারবে না।
মুদিদোকানের আয়ে আলিফদের সংসার চলে। নিজেদের সাধ্যমতো অর্থ খরচ করে চিকিৎসার জন্য যখন আর ব্যয় করতে পারছিলেন না, তখন আমিনুল হোসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করেন। সেখান থেকে আলিফের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।