মুক্তাগাছায় শ্রমিক দলের নতুন কমিটি, পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

মুক্তাগাছায় শ্রমিক দলের নতুন কমিটিতে পদ না পাওয়া নেতা–কর্মীরা ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। আজ মঙ্গলবার বিকেলেছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা পৌর শাখা শ্রমিক দলের নতুন কমিটিকে বিতর্কিত ও পকেট কমিটি দাবি করে পদবঞ্চিত একটি পক্ষ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে মুক্তাগাছা থানা এলাকায় ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করে। এ সময় ঘণ্টাখানেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

আজ মঙ্গলবার জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোহাম্মদ আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ২১ সদস্যবিশিষ্ট মুক্তাগাছা উপজেলা কমিটি ও ২৩ সদস্যবিশিষ্ট পৌর শাখা কমিটি প্রকাশ করা হয়। পৌর শাখা কমিটিতে সভাপতি করা হয় মো. জহিরুল ইসলামকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় মো. রাশিদুল ইসলামকে (রাসেল)। দুপুরে এই কমিটি প্রকাশ হওয়ার পরই পদবঞ্চিত কিছু নেতা-কর্মীর মধ্যে অসন্তোষ শুরু হয়।

আজ বিকেল চারটার দিকে মুক্তাগাছা থানার সামনের এলাকায় নেতা-কর্মীরা নবগঠিত পৌর শ্রমিক দলের কমিটিকে পকেট কমিটি দাবি করে বিক্ষোভ করেন। সড়ক অবরোধ করে কমিটি বাতিল চেয়ে স্লোগান দেন। ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন আশরাফুল ইসলাম (ময়না)। তিনি শ্রমিক দলের পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন।

এ সময় আশরাফুল ইসলাম বলেন, সবার সমন্বয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার প্রত্যয় ছিল জেলা নেতাদের। কিন্তু এখানে নির্বিচারে পদ–বাণিজ্য করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে পদবঞ্চিত হয়েছেন ত্যাগী, নিবেদিত ও নির্যাতনের শিকার নেতা–কর্মীরা। টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, এই কমিটিতে অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিড, বিতর্কিত লোক রয়েছেন। বিগত সময় দলের বিপক্ষে গিয়ে কাজ করেছেন, তাঁদেরও স্থান দেওয়া হয়েছে কমিটিতে। দলের আদর্শের তৃণমূলের ত্যাগী নেতারা পদবঞ্চিত হয়েছেন। বিতর্কিত এই কমিটি বাতিল করে যাঁরা দলের জন্য পরিশ্রম করেছেন, আন্দোলনে রাবার বুলেট খেয়েছেন, তাঁরা দায়িত্ব পান। কমিটি বাতিল দাবিতে আগামীকাল বুধবার পুনরায় বিক্ষোভ মিছিল করা হবে।

নবগঠিত মুক্তাগাছা পৌর শাখা কমিটির সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘৫ আগস্টের পর অনেক নতুন বিএনপি মাঠে নেমেছে। তাদের কিছু দোসর আজ কমিটির বিরোধিতা করেছে। যারা এসব করেছে, বিগত সময়ে তাদের কোনো আন্দোলন–সংগ্রামে পাওয়া যায়নি। ৫ আগস্টের পর থেকে পদপ্রত্যাশী অনেকে বেরিয়েছে, কিন্তু মাঠে তাদের শ্রম-ঘাম নেই। মাঠে যাদের শ্রম-ঘাম রয়েছে, তারাই কমিটিতে রয়েছে। এ কারণে জেলার নেতাদের ধন্যবাদ জানাই। আজকের বিষয়টি দলীয় নেতা-কর্মীদের জানিয়েছি।’

দল এখন ভালো অবস্থানে থাকার কারণে সবাই সংগঠন করতে চান জানিয়ে ময়মনসিংহ জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, ‘যাঁদের কমিটিতে রাখা হয়েছে, আগেও তাঁরাই দায়িত্বে ছিলেন; কিন্তু এখন কেন মানছেন না, আমরা তা পরিষ্কার নই।’ টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, জেলা কমিটি এই অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত নয়। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের পরামর্শেই নতুন কমিটি দেওয়া হয়। যেহেতু তারাই (স্থানীয় বিএনপি) সুপারিশ করেছে, চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তারাই পদক্ষেপ নেবে।