ফরিদপুরে শিক্ষার্থীকে জ্যান্ত কবর দিয়ে হত্যার চেষ্টা, থানায় অভিযোগ
ফরিদপুরে জিহাদ মাতুব্বর (১২) নামের এক শিক্ষার্থীকে জ্যান্ত কবর দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে কোতোয়ালি থানায় জিহাদের বাবা বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টার একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
সম্প্রতি একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন তরুণ ওই শিশুকে ধরে রেখেছেন। শিশুটি কান্নাকাটি করছে। ওই তরুণদের বলতে শোনা যায়, ‘এখানে খোঁড়’, ‘ওখানে খোঁড়’। এক তরুণকে কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়তেও দেখা যায়।
জিহাদ ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের বড় মাধবপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মোস্তাক মাতুব্বরের ছেলে। সে কানাইপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। আজ সোমবার দুপুরে শহরের আলীপুর মহল্লায় অবস্থিত স্থানীয় একটি পত্রিকা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন মোস্তাক মাতুব্বরসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাক মাতুব্বর বলেন, ‘গত শনিবার রাতে ওয়াজ শুনে বাড়ি ফেরার সময় এলাকার বখাটে ও মাদককারবারি হোগলাকান্দি গ্রামের সিফাত মোল্যা (২৪), মাসুম শেখ (২৩), মারুফ শেখ (২০), শাকিল শেখ (১৯), আরাফাত মোল্যা (২০) ও মৃগী গ্রামের সজল (২২) জিহাদকে বেদম মারপিট শেষে একটি গোরস্থানে নিয়ে কবর খুঁড়ে জ্যান্ত পুঁতে হত্যার চেষ্টা করে। তরুণেরা জিহাদকে দিয়ে আমার কাছে ফোন দিয়ে বলতে বলে, “তোর আব্বাকে মোবাইল ফোন করে বল, আমরা তোকে ধরে এনেছি। তোকে ছাড়িয়ে নিতে হলে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তোর আব্বা টাকা না দিলে তোকে খুন করে কবর দিয়ে দেব।” কথা বলতে জিহাদ অস্বীকার করলে, আসামিরা তাকে নির্মমভাবে মারধর করে। একপর্যায়ে তারা মাটি খুঁড়ে ছেলেকে জ্যান্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পরই আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে কোনোমতে পালিয়ে জিহাদ রক্ষা পায়। ওই রাতেই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।’
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদউজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য উপপরিদর্শক ফাহিম ফয়সালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক ফাহিম ফয়সাল বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মোস্তাক মাতুব্বর একজন মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বাড়িতে নিয়মিত জুয়ার বোর্ড বসে। এই জুয়া ও মাদক নিয়ে এলাকার তরুণদের সঙ্গে তাঁর টাকাপয়সার লেনদেন নিয়ে বিরোধ ছিল। এর জেরে মোস্তাকের ছেলেকে ভয় দেখানোর জন্য এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।