যশোরে আত্মসমপর্ণকারী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের আইনজীবী আটক

আটকপ্রতীকী ছবি

যশোরে আদালতে আত্মসমর্পণকারী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের আইনজীবী ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ কবীর হোসেনকে (জনি) আটক করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে আটক করা হয়।

আটক আইনজীবী কবির হোসেনের সহকর্মী ও স্বজনদের দাবি, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পক্ষে আদালতে আইনি লড়াইয়ে অংশ নেওয়ায় তাঁকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক কবির হোসেন যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা তিনটি মামলার আইনজীবী তিনি। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পর তাঁকে আটক করায় আইনজীবী সমিতির সদস্যরা পক্ষ-বিপক্ষে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আইনজীবী বলেন, ‘কবির হোসেনকে আটক করার কথা নয়। শুধু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পক্ষে আদালতে দাঁড়ানোর কারণে তাঁকে আটক করা হয়েছে। এটা পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আইনজীবীদের জন্য হুমকি। আমরা এ ঘটনার নিন্দা জানাই।’

বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা যশোর সদর ও অভয়নগর উপজেলার তিনটি মামলার আওয়ামী লীগের ১৩২ নেতা-কর্মী গতকাল দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। এসব মামলার বিষয়ে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইনজীবী কবির হোসেন। পরে সন্ধ্যায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

জানতে চাইলে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্তজা বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই আমি কোনো মন্তব্য করব না।’

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মোল্লা ও শ্রমবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মনোয়ার হোসেন। এ ছাড়া দুটি উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা মামলার আসামি।

জেলা আইনজীবী সমিতি ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনসহ ৯৬ জনকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়। ওই মামলার এজাহারভুক্ত ২২ জন গতকাল যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালতের বিচারক গোলাম কিবরিয়া জামিন না মঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে অভয়নগর উপজেলার বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা পৃথক দুটি মামলায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ১১০ নেতা-কর্মী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এই আদালতের বিচারক পলাশ কুমার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

যশোর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবব্রত হরি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আইনজীবী কবির হোসেনকে আটক করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের নাশকতা কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।