বৃষ্টির মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জিরো পয়েন্ট অবরোধ

কোটা সংস্কারের দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে এসে খুলনার জিরো পয়েন্ট অবরোধ করেন। জিরো পয়েন্ট, খুলনা, ১১ জুলাইছবি: সাদ্দাম হোসেন

মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে খুলনার জিরো পয়েন্ট অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে জিরো পয়েন্টের চারটি সড়ক অবরোধ করে তাঁরা কর্মসূচি শুরু করেন। এতে চারটি সড়কেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় আসেন শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচি শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ভিজে বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। এদিকে আজ দুপুর থেকে জিরো পয়েন্ট এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ছিল পুলিশের জলকামান ও সাঁজোয়া যান। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশ কোনো বাধা দেয়নি। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।

আজ অষ্টম দিনের মতো কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। এর আগে দুই দিন জিরো পয়েন্ট, তিন দিন নগরের শিববাড়ী মোড় ও পরবর্তী দুই দিন খানজাহান আলী সেতু (রূপসা সেতু) অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা; পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত); সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।

জিরো পয়েন্ট এলাকাটি খুলনা নগর ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত। ঢাকা, সাতক্ষীরা, যশোরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চারটি সড়ক এসে মিলিত হয়েছে সেখানে। খুলনা নগরে প্রবেশের অন্যতম পথও সেটি। শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে চারটি সড়কেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় চারপাশে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়।

শিক্ষার্থীরা জানান, যত দিন সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিল না হবে, তত দিন তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। উচ্চ আদালত আপাতত এক মাসের জন্য রায় স্থগিত রেখেছেন। কিন্তু এক মাস পরই আবার রায় কার্যকর হতে পারে। তাই কোটাপ্রথা সংস্কার করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানান তাঁরা।

জিরো পয়েন্ট এলাকাটি খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) হরিণটানা থানার মধ্যে পড়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন। পুলিশও শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রেখেছে। আন্দোলনের কারণে চারটি সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।