চুয়াডাঙ্গায় তীব্র ঠান্ডায় চালু ৩৫ কোচিং সেন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান

তীব্র শীতে খোলা রাখায় কোচিং সেন্টারে অভিযান চালান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাদাত হোসেন। বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা শহরেছবি: সংগৃহীত

তীব্র ঠান্ডার জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠদান বন্ধ হলেও খোলা রাখা ৩৫টি কোচিং সেন্টারে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। কোচিং সেন্টারের পরিচালকদের সতর্ক করা হয়েছে। ছুটি দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের। আজ বুধবার সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাদাত হোসেন।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শৈত্যপ্রবাহের কারণে সরকার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে। এমন অবস্থায় কোচিং সেন্টার চালু রাখার বিষয়টি উদ্বেগজনক ঘটনা। অভিযানকালে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন করা হয়েছে।

মোহাম্মদ সাদাত হোসেনের ভাষ্য, অভিভাবকেরা তাঁকে জানিয়েছেন যে কোচিং সেন্টারের মালিকদের চাপে পড়ে তাঁরা তীব্র শীতের মধ্যেও ছোট ছোট শিশুদের পড়াতে নিয়ে আসেন। তবে কোচিং সেন্টারের পরিচালকেরা নিজেদের ভুল স্বীকার করেন এবং পরবর্তী সময়ে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার অঙ্গীকার করেন।

এদিকে তিন দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ এবং এক দফায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের পর চুয়াডাঙ্গায় আবারও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জ প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানিয়েছে, আজ সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেলার সব মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজও পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

আরও পড়ুন

ঢাকার নির্দেশনা মেনে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তবিবুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার এক নোটিশের মাধ্যমে জানান, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ওপরে না ওঠা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সমন্বয়হীনতা এবং কোচিং সেন্টারের পরিচালকদের বেপরোয়া মনোভাবের ঘটনায় বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চুয়াডাঙ্গা শাখার সভাপতি হাবিবি জহির রায়হান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা খেয়াল করছি যে শীত বিবেচনা করে কেউ ছুটি দিচ্ছে, কেউ দিচ্ছে না। প্রাইমারি স্কুল দিলে হাইস্কুল দিচ্ছে না। আবার হাইস্কুল দিলে কলেজ দিচ্ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় করে শীতকে ঘিরে কমন ভ্যাকেশন চালু করা উচিত।’

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মার্টিন হীরক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশার মধ্যে চলাচল করলে শিক্ষার্থীরা সর্দি, কাশি, জ্বর ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। আবার যাদের অ্যাজমা বা হাঁপানি আছে, তা বেড়ে যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতির আশঙ্কায় সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে, কোচিং সেন্টারে গেলেও একই ক্ষতি হবে। তাই কোচিং সেন্টার খুলে রাখা অন্যায়। এ জন্য প্রশাসনের নজরদারি অব্যাহত রাখা দরকার।

আরও পড়ুন