থানায় হামলার সময় ভারতে থেকেও আসামি হওয়া আওয়ামী লীগ নেতার জামিন
রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় জামিন পেয়েছেন গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিমুল হক। আসামির জামিন ও রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে আজ রোববার দুপুরে গোদাগাড়ী আমলি আদালতের বিচারক মো. লিটন হোসেন এ আদেশ দেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী সালাউদ্দিন বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ সেপ্টেম্বর রাতে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার হাটপাড়া ভগবন্তপুরের বাসা থেকে নাসিমুল হককে গ্রেপ্তার পুলিশ। নাসিমুলের পাসপোর্ট ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্রের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ আগস্ট তিনি সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে গমন করেন। এই বন্দর দিয়ে ১৩ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন। মনিপাল হাসপাতালে ৬ আগস্টের ব্যবস্থাপত্র রয়েছে। তাকে ৫ আগস্টের ঘটনার মামলায় সামনের দিকের আসামি করা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সালাউদ্দিন বিশ্বাস জানান, গত বুধবার তিনি নাসিমুল হকের জামিনের জন্য গোদাগাড়ী থানার আমলি আদালতে আবেদন করেছিলেন। সেদিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে আসামির রিমান্ডের আবেদন এসেছে। তখন আদালত রিমান্ড ও জামিন শুনানির জন্য রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করেন। ভারতে থাকা ব্যক্তি কীভাবে আসামি হলেন, তা জানতে এদিন মামলার বাদী এসআই রেজাউল করিমকেও তলব করেন আদালতের বিচারক মো. লিটন হোসেন।
আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে আদালতে রিমান্ড ও জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে বিচারক আসামি নাসিমুল হকের জামিন মঞ্জুর করেন। নাসিমুল তখন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবী সালাউদ্দিন বিশ্বাস জানান, সন্ধ্যার দিকে নাসিমুল রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পাবেন।
গত ৫ আগস্ট গোদাগাড়ী থানায় হামলার অভিযোগে ৩ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেন গোদাগাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম। মামলাটি তদন্ত করছেন থানার আরেক এসআই আনোয়ার।
এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল ১০টার দিকে এজাহারনামীয় ৪০ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৬০০ থেকে ৭০০ জন লোক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গোদাগাড়ী থানার প্রধান ফটকের সামনে হাজির হয়। আসামিরা থানা ভবনের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং পুলিশের তিনটি গাড়িসহ পাঁচ-ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করে। এরপর আসামিরা থানার মূল ভবনে প্রবেশ করে অস্ত্রাগার ভেঙে অস্ত্র ও গুলি লুট করে। প্রাণের ভয়ে থানা পুলিশের কর্মকর্তারা ভবনের ছাদের ওপর আশ্রয় নেন। আসামিরা কিছু সময় তাণ্ডব চালিয়ে থানা ভবন ত্যাগ করে। এজাহারে বর্ণিত অভিযোগ অনুযায়ী, হামলায় নেতৃত্ব দেন রাজশাহী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। নাসিমুল হককে এই এজাহারের ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে।