নেত্রকোনায় ছাত্রী হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার হননি অভিযুক্ত তরুণ
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় স্কুলফেরত ছাত্রী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি (দা) উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। তবে রাত নয়টার সময় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এর আগে বেলা তিনটার দিকে বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে উপজেলার ছালিপুরা এলাকায় মুক্তি বর্মণ (১৬) নামের ওই ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেন মো. কাওছার মিয়ার (১৮) নামের এক তরুণ। বিকেল পাঁচটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা ওই স্কুলছাত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মুক্তি বর্মণ উপজেলার প্রেমনগর গ্রামের নিখিল বর্মণ ওরফে কীর্তন বর্মণের মেয়ে এবং প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। আর অভিযুক্ত কাওছার মিয়া একই গ্রামের মো. শামসু মিয়ার ছেলে।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. ফয়েজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা আমরা উদ্ধার করেছি। অভিযুক্ত কাওছারকে গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।’
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্ত কাওছার কয়েক মাস আগে নিহত স্কুলছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ওই ছাত্রী রাজি না হওয়ায় বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করতেন ওই তরুণ। সপ্তাহখানেক আগে বিষয়টি কাওছারের পরিবারকে জানায় মুক্তির পরিবার। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে আজ বেলা পৌনে তিনটার দিকে বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে মুক্তিকে কুপিয়ে আহত করেন কাওছার। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নেন। সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুক্তি বর্মণের সহপাঠীরা জানায়, আজ বেলা পৌনে তিনটার দিকে বিদ্যালয় থেকে তারা একসঙ্গে বাড়িতে ফিরছিল। বিদ্যালয়ের প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ছালিপুরা এলাকায় পৌঁছানোর পর হঠাৎ কাওছার দা দিয়ে মুক্তিকে কোপাতে শুরু করে। এ সময় তারা ভয় পেয়ে দৌড় দেয় এবং চিৎকার করতে শুরু করে। স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে মুক্তিকে উদ্ধার করে বারহাট্টা হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল খায়ের আকন্দ বলেন, ‘মুক্তির পরিবার খুবই দরিদ্র। মেয়েটি শান্ত ও মেধাবী ছিল। সে মানবিক শাখার ছাত্রী ছিল। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক। আমরা বখাটে তরুণকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’ তিনি বলেন, মুক্তিরা ছয় বোন, সে চতুর্থ। সবাই লেখাপড়া করে। তার দুই বোন নেত্রকোনা কলেজে পড়ে। এক বোন এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।