শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে টাঙ্গাইল সদরের ইউএনওকে প্রত্যাহার
টাঙ্গাইলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান বিন মোহাম্মদ আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে কিছুক্ষণ পর তাঁর প্রত্যাহারের আদেশ আসে। ওই ইউএনওকে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের আর্থিক অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠানে আন্দোলনবিরোধী এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা ওই ইউএনওর প্রত্যাহারের দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সদর উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক অনুদান দিতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বেলা ১১টায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক বক্তব্য দেন। পরে সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খালেকুজ্জামান চৌধুরীকে বক্তব্য দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যান খালেকুজ্জামান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন। মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে শিক্ষার্থীরা পরিষদ মিলনায়তন থেকে বের হয়ে ইউএনওর অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। তারপরও শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের সামনে ইউএনওর অপসারণের দাবি করেন। পরে জেলা প্রশাসক অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে তাঁর কার্যালয়ে চলে যান।
পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানে অবস্থান নিয়ে ইউএনওর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও হাসান বিন মোহাম্মদ আলীকে তাঁদের সামনে আনা হয়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান। পরে জেলা প্রশাসক বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে ওই ইউএনওকে প্রত্যাহার করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম কামরুল ইসলাম বলেন, খুনির দোসরদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের এক মঞ্চে অনুষ্ঠানের আয়োজন কোনোভাবেই কাম্য নয়। যাঁরা এ ধরনের আয়োজন করেছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তাঁরা।
জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম ইউএনওকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তাঁকে ( হাসান বিন মোহাম্মদ আলী) ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।