সাবেক মন্ত্রী মোকতাদিরকে আসামি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরেকটি মামলা
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ১১৭ নেতা-কর্মীর নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফরহাদ হোসেন মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা শহরের বাসিন্দা হুসাইন মোহাম্মদ আবুল বাশার বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়। এ নিয়ে মোকতাদিরের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঁচটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি হত্যা মামলা ও দুটি বিস্ফোরক আইনে। মোকতাদির ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, উপদপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, সদস্য ও সাবেক ভিপি হাসান সারওয়ার, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী এম এ এইচ মাহবুব আলম ও আরেক ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুসা আনসারী, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন, ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিকাইল হোসেন, পৌর যুবলীগের সহসভাপতি আমজাদ হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ৪ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের খৈয়াসার চৌরাস্তা মোড় থেকে সাধারণ ছাত্র ও জনতা মিছিল নিয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের শহরতলির বিরাসার মোড়ে পৌঁছায়। সে সময় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনী মিছিলের চারদিকে ঘেরাও করে। সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী মোকতাদিরের হুকুমে ও নেতৃত্বে তাঁরা মিছিল উদ্দেশ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে। ককটেলের স্প্লিন্টারের আঘাতে হুসাইন মোহাম্মদ আবুল বাশারসহ এলাকার কয়েকজন আহত হন। এ সময় কেরোসিন ও পেট্রল ঢেলে ১০-১৫টি মোটরসাইকেল ও আশপাশের দোকানপাটে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেনের হাতে থাকা পিস্তলের গুলি রাশেদ মিয়ার বুকে বিদ্ধ হয়। তিনি বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। এ সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে আরও কয়েকজন আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান মামুন বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।