কুষ্টিয়ায় ধরপাকড়ে আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে পারেননি আন্দোলনকারীরা

কুষ্টিয়ায় পুলিশ কয়েক তরুণকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। আজ বুধবার বিকেলে আদালত চত্বরের পাশে থেকে তোলাছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক ধরপাকড় ও তল্লাশির কারণে আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে পারেননি আন্দোলনকারীরা। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা ও গুমের প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের জন্য সেখানে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের।

আজ বুধবার বেলা আড়াইটায় আদালত চত্বরে এ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। এ নিয়ে সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কর্মসূচি পালনের জন্য কুষ্টিয়া ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে পোস্ট দেখা যায়।

বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত আদালত চত্বরের আশপাশ থেকে ১৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থী রয়েছেন। এর আগে বেলা দুইটা থেকে শহরের মজমপুর থেকে চৌড়হাস হয়ে মোল্লাতেঘরিয়া মোড় পর্যন্ত র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশের গাড়ির টহল দিতে দেখা যায়। তাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন।

বেলা আড়াইটার দিকে আদালত চত্বর ও এর আশেপাশের এলাকা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। দুই সরকারি কার্যালয়ে প্রবেশ করার সব কটি ফটকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বন্ধ করা হয় কয়েকটি ফটক। যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করে ডান দিকে শহীদ মিনার চত্বরে চলা সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলার প্রধান ফটকও তালা লাগিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়। এতে বেচাকেনা বন্ধ হয়ে যায়। গণমাধ্যমকর্মীদেরও নানা প্রশ্ন মোকাবিলা করে প্রবেশ করতে হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সাদ্দাম বাজার এলাকায় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে বিজিবির সদস্যদের দুটি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

বেলা তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মোড়ে মোড়ে তল্লাশিতে সন্দেহজনক অন্তত ১৬ জনকে আটক করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় নেয় পুলিশ। তাঁদের অধিকাংশই ছাত্র। রয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থীও। বিকেল চারটার দিকে চৌড়হাস মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশের তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ ও ব্যাগ তল্লাশি করা হয়। সন্দেহ হলে তাঁদের আটক করে গাড়িতে করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় নেওয়া হয়।

কালেক্টরেট চত্বরের সামনে সিএনজি থেকে পাঁচজন একসঙ্গে নামলে পুলিশ তাঁদের ব্যাগ তল্লাশি করে। তাঁদের প্রত্যেকের কাঁধে ব্যাগ ছিল। পরে পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে যায়।

তবে এ বিষয়ে জানতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহফুজুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্দেহজনক ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। যাচাই–বাছাই শেষে রাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। কোনো ছাত্রকে আটক করা হবে না। তবে কোনো দুষ্কৃতকারীর তথ্যপ্রমাণ পেলে তাঁদের আইনের আওতায় নেওয়া হবে।