প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ভবনে ১৯ মৌচাক, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা
নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের বিভিন্ন অংশে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ১৯টি চাক বেঁধেছে মৌমাছির দল। উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের চারিতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে দেখে মিলবে এসব মৌচাকের। এ কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন মৌমাছি শিক্ষার্থীদের তাড়া করে। কখনো কখনো হুলও ফুটায়। ভয়ে স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ের সামনের পথ দিয়ে চলাচল প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। চারিতলা গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষার্থী অভিভাবক আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষার পর ক্লাস না থাকায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসেনি। এই সময়ের মধ্যে মৌমাছিরা মৌচাক তৈরি করে।
ওই গ্রামের কৃষক সুলেমান মিয়া ও ফজর আলী জানান, এবার ওই এলাকায় বেশ কিছু খেতে শর্ষের চাষ হয়েছে। শর্ষের মধু সংগ্রহ করতে এখানে মৌমাছির আগমন ঘটেছে। আশপাশে বনজঙ্গল না থাকায় বিদ্যালয় ভবনে মৌমাছি চাক বসিয়েছে বলে ধারণা করেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীর অভিভাবক ফজলু মিয়া বলেন, স্কুলে এতগুলো মৌচাক থাকায় শিশুরা চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। স্কুল চলাকালে শিশুরা যদি দুষ্টুমি করে মৌচাকে ঢিল ছোড়ে, তাহলে যেকোনো সময় তারা মৌমাছি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।
গতকাল সোমবার বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রকে মৌমাছি কামড় দিয়েছে বলে জানাল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র পলাশ মিয়া। সে বলে, ‘প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে থাকি। স্কুলের উঁচু দেয়ালে অনেক মৌমাছির চাক রয়েছে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলরুবা আক্তার বলেন, গত মাসে স্কুল ভবনের দেয়ালগুলোতে হঠাৎ করে মৌমাছিরা বাসা বাঁধে। এ পর্যন্ত ১৯টি মৌচাক হয়েছে। এতে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ তাঁরা আতঙ্কে আছেন। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ভয়ে স্কুলে আসতে চাইছে না।
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তার বলেন, স্কুলে মৌমাছিরা বাসা বাঁধার খবর পেয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যাওয়ার বিষয়টি জানতেন না। বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে নিরাপত্তার স্বার্থে মৌচাক ভাঙা হবে। এর থেকে যা মধু পাওয়া যাবে, তা বিক্রি করে স্কুলের উন্নয়নমূলক কাজে লাগানো হবে।