লক্ষ্মীপুরে তিনটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা
লক্ষ্মীপুরে চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিযোগ, তাঁদের এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। আবার কোথাও কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে রায়পুর উপজেলার বালিকা পাইলট উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা ইসলামের এজেন্টরা ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে চাইলে নৌকার কর্মীরা তাঁদের বাধা দেন। সেখান থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার পর নৌকা প্রার্থীর একটি দল ভোটকেন্দ্রের পাশের সড়কে অবস্থান নেয়। সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত রায়পুর পৌর শহরের এই কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি একেবারে কম দেখা যায়।
তবে কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এ কে এম সাইফুল হক বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা ইসলামের কোনো এজেন্ট আসেনি। প্রথম ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
রায়পুর উপজেলার সোনাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা ইসলামের এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সকালে এই কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন এজেন্ট কেন্দ্রে আসেন। পরে তাঁদের বের করে দেওয়া হয়। তবে কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোস্তফা মিরন বলেন, সকালে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টে এসেছেন। তবে এক ঘণ্টা পর আর তাঁদের দেখা পাননি।
সোনাপুর দাখিল মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী কোনো এজেন্ট দেখা যায়নি। এই কেন্দ্রে সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোটারের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বিজয় কৃতনিয়া বলেন, সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি একটু কম ছিল। তবে সকাল ১০টা পর্যন্ত শতাধিক ভোট পড়েছে।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা ইসলাম বলেন, ভোট শুরুর আগে তাঁর এজেন্টরা কেন্দ্রে ঢুকতে চান। কিন্তু নৌকা প্রার্থীর লোকজন তাঁর এজেন্টদের ঢুকতে দেননি। বিষয়টি প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তবে নৌকার প্রার্থী নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, এজেন্ট ঢুকতে বাধা দেওয়া বা বের করে দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়। পরাজয় নিশ্চিত জেনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মিথ্যাচার করছেন।
লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল প্রতীক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ইছাপুর ইউনিয়নের সোন্দড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ভাদুর ইউনিয়নের পশ্চিম ভাদুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর লোকেরা তাঁর এজেন্টদের মারধর করে বের করে দিয়েছেন। এই নিয়ে তিনি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
তবে নৌকার প্রার্থী আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছেন। কোনো এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়নি।
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ সাত্তার বলেন, অনেক কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন নৌকার সমর্থকেরা। কয়েকটি কেন্দ্র থেকে বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী মিয়া গোলাম ফারুক বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের কোনো কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়নি।
লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরুষ ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ফয়েজ আহমেদ বলেন, সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৩০ ভোট পড়েছে। সকালে সব দলের এজেন্ট কেন্দ্র এসেছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা সুরাইয়া জাহান বলেন, এজেন্ট ও ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়ার ব্যাপারে কিছু অভিযোগ এসেছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, কোনো প্রার্থী ফোনে যে কোনো অভিযোগ জানালে সেটিও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নেই একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করছে।