২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

‘ক্রসফায়ারে’ হত্যার ঘটনায় ১০ বছর পর সাতক্ষীরায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

ক্রসফায়ার
প্রতীকী ছবি

১০ বছর আগে পুলিশ বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর বিএনপিকর্মীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সাতক্ষীরার তৎকালীন পুলিশ সুপার, ৪ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম আনিছুর রহমান (২৮)। তিনি সাতক্ষীরা সদরের কুচপুকুর গ্রামের ওজিয়ার মোড়লের ছেলে।

২০১৪ সালের ১৮ জুলাই আনিছুরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যশোরের শার্শা থানাধীন বসতপুর গ্রামের একটি ফাঁকা মাঠে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনাটিকে তখন ‘ক্রসফায়ারে’ (বন্দুকযুদ্ধে) নিহত বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়। এ ঘটনায় নিহত আনিছুরের ভাই মকফুর রহমান বাদী হয়ে আজ মঙ্গলবার সাতক্ষীরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মশিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালতের বিচারক নয়ন কুমার বড়াল বিকেল পাঁচটার দিকে মামলাটি গ্রহণ করে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে একজন সহকারী পুলিশ সুপার বা পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলার তদন্ত করানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলায় আসামি হিসেবে সাতক্ষীরার তৎকালীন পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সদর সার্কেলের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, সদর থানার তৎকালীন ওসি এনামুল হক, যশোরের শার্শা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) কবীর হোসেন মোল্লাসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৮ জুলাই রাত ৮টার দিকে ৪ পুলিশ কর্মকর্তা দুটি মাইক্রোবাসে এসে আনিছুর রহমানকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। তাঁরা আনিছুরকে সাতক্ষীরা সদর থানায় নিয়ে রাতভর নির্যাতন করেন। এরপর যশোরের শার্শা উপজেলার বসতপুর গ্রামের একটি ফাঁকা মাঠে বুকে ও পায়ে গুলি করে তাঁকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যান। পরদিন সকালে সেখানে লাশ দেখতে পেয়ে শার্শা থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পর ওই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে আনিছুরের লাশ রাতেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আরজিতে বলা হয়, সে সময় পরিবারের সদস্যরা সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দিতে গেলে তা নেওয়া হয়নি। এখন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন হওয়ায় মামলাটি করলেন বলে বাদী উল্লেখ করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুচপুকুর গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, একই গ্রামের রবিউল ইসলাম, কুচপুকুর জামতলা গ্রামের এনামুল হক ও রনি আহম্মেদ, দক্ষিণ দেবনগর গ্রামের মুনসুর আলী ও হামজার আলী, ভবানীপুর গ্রামের ফারুক হোসেন, বালিয়াডাঙা গ্রামের মাঝারুল ইসলাম, কাশেমপুর গ্রামের ইকরামুল, কাটিয়া বাজারের শেখ ফারুক হোসেন, পলাশপোল এলাকার খায়রুল বাসার, সুলতানপুরের কাজী ফিরোজ হাসান, বাগানবাড়ি মাঝেরপাড়ার শেখ আনোয়ার হোসেন, পায়রাডাঙা গ্রামের শফিকুল ইসলাম, জিফুলবাড়ি (গোবরদাড়ি) গ্রামের জয়নুল আরা, ভবানীপুর গ্রামের নাজমুস সাকিব, একই গ্রামের সামছুর রহমান, শহীদুল ইসলাম, আড়ুয়াখালি গ্রামের জাকির হোসেন, আবদুর রকিব, মনিরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুরের জাহাঙ্গীর ও মজিবর রহমান, বাঁশঘাটা গ্রামের আক্তার হোসেন, শিয়ালডাঙা গ্রামের ইমন ওরফে পটল, আগরদাঁড়ি গ্রামের আবদুল বারী গাজী, বাবুলিয়া গ্রামের মাস্টার পলাশ, কলারোয়া উপজেলার ওফাপুর গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিক ও আশাশুনি উপজেলার কামালকাটি গ্রামের শাহাজাহান গাজী।