২৪ ঘণ্টার মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেওয়ার দাবি শিক্ষক সমিতির
২৪ ঘণ্টার মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতি। সেই সঙ্গে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে প্রত্যাহার করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ জানানো হয়। পাশাপাশি উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার সন্ধ্যায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। শিক্ষক সমিতি হামলায় অংশ নেওয়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করে সুষ্ঠু বিচার, সন্ত্রাসী হামলায় অংশ নেওয়া সাবেক শিক্ষার্থীদের (ছাত্রলীগের সাবেক নেতা) সনদ বাতিল ও হামলায় অংশ নেওয়া বর্তমান শিক্ষার্থীদের (ছাত্রলীগের নেতা) বহিষ্কারও দাবি করেছে।
সাত দফা দাবিতে শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের মধ্যে ১ মে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। যদিও হলে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে অবস্থান করছেন।
গত ৩০ এপ্রিল সিন্ডিকেটের ৯৩তম জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয়, হল বন্ধ করাসহ যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য মনে করছে। উপাচার্য সিন্ডিকেটের সভায় হলে অস্ত্র ও অর্থের চালান হচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করে দেন। কোনো ধরনের গোয়েন্দা প্রতিবেদন ছাড়া এই ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছে শিক্ষক সমিতি।
শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে হামলাকারী, হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার জেলখাটা দাগি আসামি ও সন্ত্রাসীদের হল ও ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ করে দেওয়া হবে বলে শিক্ষক সমিতি আশঙ্কা করছে। উপাচার্যের এই ধরনের ভিত্তিহীন দাবি ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আশ্রয় ও লালন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারের ভাবমূর্তি সংকটে ফেলার একটি নীলনকশা বলে মনে করে সমিতি। তাদের দাবি, সিন্ডিকেটের নির্দেশনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও হল প্রাধ্যক্ষরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করছেন। উপাচার্যের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের বলেন, একজন অদক্ষ উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পারছেন না। তিনি কোনো ঘটনার তদন্ত কমিটি করছেন না। বিচার করছেন না। যেকোনো কাজে দীর্ঘসূত্রতা করছেন। তাঁর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক নেই। ১৮ জন শিক্ষক প্রশাসনের বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করেন। বহিরাগতদের এনে ক্যাম্পাসে থাকতে চান উপাচার্য। এভাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চলে না। শিক্ষকদের সাত দফা দাবি নিয়ে উপাচার্য কোনো ধরনের আলোচনায় বসেননি। উল্টো সন্ত্রাসী এনে শিক্ষকদের ওপর ২৮ এপ্রিল হামলা করান। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির সঙ্গে বসলে ওরা আমাকে স্লেজিং করে। অতীতে বসেছি। ওরা একেকজন একেকভাবে আমাকে অ্যাটাক করে কথা বলেন। আমাকে আমদানি করা পচা মাল বলেন, ডাস্টবিন বলেন। ওদের মুখের ভাষা যাচ্ছেতাই। ওদের দাবি নিয়ে কমিটি হবে।’