লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও মাবনবন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে তোলা।ছবি-প্রথম আলো

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মাহাবুবুল করিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করা হয়। এর আগে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন তাঁরা। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করা হয়।

এর আগে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহাবুবুল করিমের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন ওই কলেজের শিক্ষকেরা।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে এক জরুরি সভায় অধ্যক্ষ ও প্রধান সহকারীর অপসারণের দাবি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে গত শুক্রবার শিক্ষক পরিষদের সভাপতি উপাধ্যক্ষ মো. আজিম উদ্দিন ও সম্পাদক আবু সিনা ছৈয়দ তারেক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ মাহাবুবুল করিম দীর্ঘদিন ধরে কলেজে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে আসছেন। তিনি নামে-বেনামে বিভিন্ন বিল-ভাউচার দিয়ে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের লেজুড়বৃত্তি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন–বিরোধী ছিলেন তিনি। এ ছাড়া অধ্যক্ষের উদাসীনতায় কলেজটিতে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলাধুলার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই—লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলে আসেন শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার। তিনি জানান, অধ্যক্ষ সব সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন।

শিক্ষকদের দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর থেকে অধ্যক্ষ কলেজে আসছেন না। তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক কাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। কলেজ খোলার প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের খোঁজ করতে থাকেন। পরে শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধ হয়ে প্রতিনিধির মাধ্যমে তাঁদের ক্ষোভ ও বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেন।

তাঁরা অধ্যক্ষের রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি, আর্থিক অনিয়ম, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ, তুচ্ছ কারণে কয়েকজন দরিদ্র কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা, শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। শিক্ষকদের সঙ্গে অধ্যক্ষ যেসব অন্যায়, অবিচার ও বিমাতাসুলভ আচরণ করেছেন, তা–ও উল্লেখ করা হয়।

শিক্ষক পরিষদের সভাপতি উপাধ্যক্ষ মো. আজিম উদ্দিন বলেন, সভায় অধ্যক্ষ ও প্রধান সহকারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় শিক্ষক-কর্মচারীরা তাঁদের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মাহাবুবুল করিম বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায়, দুর্নীতি করিনি। কিছু মানুষ অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নামিয়ে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন। তা ছাড়া শিক্ষকেরা আমাকে ছাড়া কীভাবে সভা ডাকে, তা–ও বোধগম্য হচ্ছে না। অনিয়মের ঘটনায় কয়েকজন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছি।’