নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এ উপলক্ষে পুরো নগরী বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে সয়লাব হয়ে গেছে। নগরের প্রধান সড়ক ছাপিয়ে চলে গেছে অলিগলিতে।
গণসমাবেশ সামনে রেখে নগরের হোটেলগুলোতে বুকিং চলছে। চলছে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা টাউন হল মাঠে কুমিল্লা (কুমিল্লা দক্ষিণ, কুমিল্লা উত্তর ও মহানগর শাখা), চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পাঁচটি শাখা বিএনপির উদ্যোগে বিভাগীয় সমাবেশ হবে। এতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি থাকবেন। জেলার ১৭ উপজেলায় সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী আসনের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশী ও সাবেক সংসদ সদস্যরা এলাকায় পোস্টার সাঁটিয়েছেন। তাঁরা কেউ ৫ হাজার, কেউ ১০ হাজার লোক জড়ো করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ নিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির নেতারা এলাকায় শোডাউন করছেন। গণসমাবেশে আসার জন্য এলাকায় সভা করছেন।
সরেজমিনে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় টাউন হল গণসমাবেশস্থল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুবালী চত্বরে ফেস্টুন রয়েছে বিভিন্ন নেতাদের। টাউন হল মাঠের দক্ষিণ পাশে আলী ম্যানশনে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাকারিয়া তাহের সুমনের বিশাল ব্যানার টানানো আছে। কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফুর ভূঁইয়া, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উত্বাতুল বারী ও সদস্যসচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, বিএনপির সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার ছবিসংবলিত ব্যানার ঝুলছে। টাউন হল মাঠের পশ্চিম পাশে টাউন হল সুপার মার্কেটের দেয়ালে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জসিম উদ্দিনের ছবি শোভা পাচ্ছে।
কুমিল্লা সিটি মার্কেটে বিলবোর্ড লাগিয়েছে মহানগর বিএনপি, সমবায় ব্যাংক ভবন, কাজী টাওয়ারেও একই অবস্থা। নগরে কুমিল্লার বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরীর ছবিসংবলিত পোস্টার সাঁটানো আছে। নিউমার্কেটসহ পুরো নগরে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিমের ছবিসংবলিত শত শত ফেস্টুন দেখা গেছে। পোস্টার সাঁটিয়েছেন পুরো নগর ও বরুড়া উপজেলায় সাবেক সংসদ সদস্য জাকারিয়া তাহের সুমন। পুরো টাউন হল এলাকায় ছোট, মাঝারি ও বড় ব্যানারে একাকার। কুমিল্লা সার্কিট হাউসের সামনে মনিরুল হক সাক্কু বিশাল বিলবোর্ড লাগিয়েছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া বলেন, ‘গণসমাবেশ ঘিরে তিন জেলায় এখন দলীয় নেতা-কর্মীরা চাঙা। সবার মধ্যে উৎসবের আমেজ। প্রতিটি আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দলীয় নেতারা গণজমায়েত করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। প্রচারণায় পিছিয়ে নেই বিএনপি। দলের প্রতিটি কর্মী অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। বিএনপি সব পর্যায়ের নেতারা এককাট্টা এখন। যে কারণে এত ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার দেখা যাচ্ছে। কুমিল্লায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হবে।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘দল আমাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করলেও গণসমাবেশে আমি যাব। আমার হাজার হাজার নেতা-কর্মী গণসমাবেশে যাবে। ২০ দিন ধরে কুমিল্লা নগর ও আদর্শ সদর উপজেলায় কাজ করে যাচ্ছি। পুরো নগরীকে সাজিয়েছি। আমার হোটেল দলের নেতাদের জন্য ছেড়ে দিয়েছি। ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারে নগরীকে সাজিয়েছি।’
কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশ ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য আমিন উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও এ গণসমাবেশে আসবেন। পুরো জেলায় সাজ সাজ অবস্থা। শান্তিপূর্ণ এ সমাবেশ হবে।