পিরোজপুরে বিএনপি কর্মীকে গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা
পিরোজপুরে সানি হাওলাদার (২০) নামের এক বিএনপির কর্মীকে গুমের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে পিরোজপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন নিখোঁজ সানি হাওলাদারের বাবা বাবুল হাওলাদার।
মামলার এজাহারে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জন সরকারদলীয় লোকজনকে আসামি করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মোহা. হেলাল উদ্দিন মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করতে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানম, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মোখলেসুর রহমান, র্যাব-১০–এর তৎকালীন কমান্ডারসহ চার র্যাব সদস্য এবং কোতোয়ালি ও সদরঘাট এলাকার আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের স্থানীয় চার নেতা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর কদমতলী এলাকার কলেজ সড়কের বাসিন্দা সদরঘাটের শ্রমিক বাবুল হাওলাদারের ছেলে মো. সানি হাওলাদার বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ও সাবেক নারী সংসদ সদস্য সানজিদা খানম লোকজন দিয়ে সানি হাওলাদারকে প্রাণনাশের হুমকি দিতেন। আসামিদের ভয়ে বাবুল হাওলাদার দুই ছেলে সানি হাওলাদার ও হিরা হাওলাদারকে নিয়ে পিরোজপুর সদর উপজেলার দুর্গপুর গ্রামে ভায়রা বজলু সিকদারের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন।
এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি রাতে বজলু সিকদারের বাড়িতে র্যাব-১০–এর সদস্যরা যান। এরপর ঘরে তল্লাশি চালিয়ে সানি হাওলাদারকে আটক করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। ১১ জানুয়ারি বাবুল হাওলাদার রাজধানীর ধলপুরে অবস্থিত র্যাব-১০–এর কার্যালয়ে গিয়ে সানি হাওলাদারের ব্যাপারে জানতে চান। এ সময় র্যাব-১০–এর কর্মকর্তারা সানি হাওলাদারকে আটকের কথা অস্বীকার করেন। এরপর বাবুল হাওলাদার বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে ছেলের সন্ধান পাননি।
মামলার বাদী বাবুল হাওলাদার বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে গুমসহ বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখেন। এ জন্য তিনি ছেলেকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনার পর তিনি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এখন শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আদালতে মামলা করেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আকন বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
পিরোজপুর সদর থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম আজ বিকেল চারটায় বলেন, তিনি আদালত থেকে মামলার কোনো আদেশের অনুলিপি এখনো হাতে পাননি।