কয়রায় সাংবাদিককে না পেয়ে স্ত্রী-সন্তানকে মারধর, বাড়ি ভাঙচুর

বাড়িতে দুর্বৃত্তদের হামলার পর ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে বাড়ির আসবাবপত্র। গতকাল খুলনার কয়রা উপজেলা ২ নম্বর কয়রা গ্রামেছবি : প্রথম আলো

খুলনার কয়রায় এক সাংবাদিককে বাড়িতে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে মারধর করেছে দুর্বত্তরা। ওই সময় বাড়িটিতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে ২ নম্বর কয়রা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন তাঁরা।

ওই সাংবাদিকের নাম সিরাজুদ্দৌলা লিংকন। তিনি ভোরের কাগজ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি।

সিরাজুদ্দৌলার স্ত্রী রোকেয়া আকতার বলেন, গতকাল রাত ৮টার দিকে ৮-১০টি মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্তরা বাড়ির গেটের সামনে আসে। তাঁর (সিরাজুদ্দৌলা) নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে ২০–২২ জন যুবক। একপর্যায়ে তারা ঘরে ঢুকে সিরাজুদ্দৌলাকে খুঁজতে থাকে। না পেয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। বাধা দিলে তারা এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এ সময় রোকেয়া আকতারের গলার সোনার চেইন ও কানের দুল ছিনিয়ে নেয় তারা। এ ছাড়া আলমারি থেকে টাকাও লুট করা হয়।

ঘটনার সময় ওই বাড়িতে ছিলেন সিরাজুদ্দৌলার ভাগনি সোনিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, ‘দুর্বৃত্তদের সবার মুখে মাস্ক ছিল। বাড়িতে ঢুকে তাঁর মামাকে (লিংকন) খুঁজে না পেয়ে মামি ও তাঁর কোলের শিশুকে মারধর করে সোনার গয়না ছিনিয়ে নেয়। তারা আমাকেও মারধর করে মামা কোথায় লুকিয়ে আছে, জানতে চায়। ঘটনার পর থেকে আমরা নিরাপত্তহীনতায় ভুগছি।’

এ বিষয়ে সাংবাদিক সিরাজুদ্দৌলা বলেন, ‘গতকাল বিকেলে উপজেলা সদরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ব্যানারে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (৪৫তম ব্যাচ) ছাত্র রাতুল হাসান আমাকে জড়িয়ে বক্তব্য দেন। পরে তাঁর নেতৃত্বেই আমার বাড়িতে হামলা হয়েছে। এর আগে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে আসায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। তাঁরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছিলেন।’

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রাতুল হাসান বলেন, ‘গতকালের ওই সমাবেশে কয়েকজন সাংবাদিকের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বক্তব্য দেওয়া হয়। এ সময় সাংবাদিক লিংকনের নাম উঠে আসে। পরে শুনেছি, তাঁর বাড়িতে হামলা হয়েছে। সেখানে আমার নাম জড়ানো হচ্ছে। আমি কোনোভাবে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।’

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থানায় অভিযোগ করা হবে বলে জানিয়েছেন সিরাজুদ্দৌলা। কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) শাহ আলম জানান, খবর পেয়ে ওই সাংবাদিকের বাড়িতে পুলিশ সদস্যদের পাঠানো হয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।