বাঞ্ছারামপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আ.লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়নের তাতুয়াকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত অলি মিয়া (৫০) উপজেলার তাতুয়াকান্দি গ্রামের মৃত শহীদ মিঞার ছেলে। তিনি ছলিমাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাতুয়াকান্দি গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইকবাল হোসেনের সঙ্গে একই গ্রামের অলি মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। রোববার সন্ধ্যায় গ্রামে এক ব্যক্তির জানাজা পড়তে যান অলি মিয়া। বাড়ি ফেরার পর প্রতিপক্ষের লোকজন অলি মিয়াকে তুলে পাশের জমিতে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও টেঁটাবিদ্ধ করে পালিয়ে যান তাঁরা। স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বাঞ্ছারামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অলি মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রঞ্জন বর্মন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই অলি মিয়ার মৃত্যু হয়েছে।
অলি মিয়ার ছেলে সিয়াম মিয়া অভিযোগ করেন, তাঁদের প্রতিপক্ষ সবুজ মিয়া, ইশা মিয়া, ইকবাল মিয়া, হাবিব মিয়া, মো. নইমুদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, বাবুল মিয়াসহ কয়েকজন বাড়িতে এসে তাঁর বাবাকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। প্রথমে নওমুদ্দিন তাঁর বাবার পেটে কোপ দিয়েছেন। পরে সবুজ এসে মুখে টেটাঁ দিয়ে আঘাত করেছেন। বাবার হত্যার বিচার চান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে ইকবাল মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ছলিমাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিছুজ্জামান বলেন, নিহত অলি ছলিমাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ইকবালসহ তাঁর লোকজনকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হোক।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম রোববার রাত ১০টার দিকে বলেন, গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইকবাল ও নিহত সাবেক ইউপি সদস্য অলি মিয়ার মধ্যে ৮-১০ বছর ধরে বিরোধ ছিল। দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে চার-পাঁচটি করে মামলা করেছে। গত বছর আগস্টেও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তখন থেকে ইকবাল ও তাঁর লোকজন কুমিল্লার হোমনায় থাকতেন। তবে গ্রামে তাঁদের যাতায়াত ছিল। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।