২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ছাত্রদলের মিছিলে গুলিতে দুজন নিহতের ঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মী, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীরা এই মানববন্ধনে অংশ নেন। আজ রোববার দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

নরসিংদীতে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে দুজন নিহত হওয়ার ঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন হয়েছে। ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মী, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীসহ কয়েক শ লোক অংশগ্রহণ করেন। আজ রোববার দুপুরে শহরের আরশীনগর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা মোড়ে প্রেসক্লাবের সামনে এসে জড়ো হয়ে এই মানববন্ধন করেন তাঁরা। মানববন্ধন শেষে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা শহরের জেলখানা মোড়ে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে ঢোকার পথে দুর্বৃত্তের হামলায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছাদিকুর রহমান ও তাঁর কর্মী আশরাফুল হক গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ছাদিকুরের মৃত্যু হয় এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন শুক্রবার সকালে মারা যান আশরাফুল। ছাদিকুর নরসিংদী সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বাদুয়ারচর এলাকার এবং আশরাফুল শহরের সাটিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার দিবাগত রাতে নিহত ছাদিকুরের বড় ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৩৫ থেকে ৪০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এজাহারে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির, তাঁর স্ত্রী দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ইলিয়াস আলী ভূঁইয়া, এই পাঁচজনকে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা বলা হয়েছে। মামলার পর এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মানববন্ধন শেষে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জেলা ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে চার মাস ধরে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের আন্দোলনের জেরে এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। একের পর এক আন্দোলনের কর্মসূচির কারণে তাঁদের ওপর চরম ক্ষুব্ধ ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির। তাঁর নির্দেশেই পদবঞ্চিতদের শান্তিপূর্ণ মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় গুলি চালিয়েছে জেলা ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা। এতে ছাদিকুর রহমানের মাথায় ও আশরাফুল হকের পিঠে গুলি লেগে দুজনেরই মৃত্যু হয়। তাঁদের মৃত্যুর দায় খায়রুল কবিরকেই নিতে হবে।

খায়রুল কবিরসহ সব আসামির দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, প্রশাসন যদি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে তাঁরা রাজপথেই এর মোকাবিলা করবেন। এ সময় খায়রুল কবিরের বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।

আরও পড়ুন

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহত ছাত্রদল নেতা ছাদিকুরের বড় ভাই ও মামলার বাদী আলতাফ হোসেন, তাঁর স্বজন বীর মুক্তিযোদ্ধা তমিজ উদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত সিনিয়র সহসভাপতি মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক জোবায়ের আহমেদ, ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা মাইদুল মিহাল ও ফাহিম ভূঁইয়া প্রমুখ।

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নরসিংদী মডেল থানার উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, এই মামলায় গ্রেপ্তার জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসাইনসহ তিন আসামিকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে আদালতে তিন আসামির রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত আসামিদের কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।