হাজারি গুড়ের ঐতিহ্য ছড়িয়ে দিতে মানিকগঞ্জে বসছে মেলা

ছোট ছোট পাত্রে ঢেলে রাখা হয়েছে হাজারি গুড়। মানিকগঞ্জের হরিরামপুরেপ্রথম আলো ফাইল ছবি

মানিকগঞ্জে আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী হাজারি গুড়ের মেলা। জেলা শহরের সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠে আজ থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে আগামী শনিবার পর্যন্ত। দেশের ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড়ের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এবং দেশব্যাপী এটি ছড়িয়ে দিতে প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, শীত এলে এ দেশের গ্রামের বাড়িগুলোয় পিঠা-পায়েস তৈরির আয়োজন শুরু হয়। এ সময়ে খেজুরের রস ও গুড়ের চাহিদা এমনিতেই বেশি। আর হাজারি গুড় হলে তো কথাই নেই! যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্য বহন করে আসছে মানিকগঞ্জের এই হাজারি গুড়।

মনভোলানো স্বাদের পাশাপাশি হাজারি গুড়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, হাতে নিয়ে চাপ দিতেই গুঁড়া গুঁড়া হয়ে যায়। হাজারি গুড় তৈরির কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, শুধু দেশেই নয়, এই গুড়ের সুনাম ছড়িয়ে আছে দেশের বাইরেও। এই গুড়ের নামেই মানিকগঞ্জ জেলার ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে—‘লোকসংগীত আর হাজারী গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর’।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলার মঞ্চে চলবে লোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠান। দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ও সমাপনী দিন শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। এই মেলায় ৪০টি স্টলে থাকবে হাজারি গুড়, খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরি নানা ধরনের পিঠা-পায়েস-মুড়ি-মুড়কি। আরও থাকবে খেজুরগাছের চারা, বাঁশ-বেত ও মাটির তৈরি জিনিস, বাদ্যযন্ত্র একতারা, দোতারাসহ গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী জিনিস।

জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, শত বছরের লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য এই জেলায়। এই জেলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজারি গুড়ও। এই দুই মিলিয়ে জেলার ব্র্যান্ডিং করা হয়েছে ‘লোকসংগীত আর হাজারী গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর’। হাজারি গুড়ের ঐতিহ্য ছড়িয়ে দিতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে এর ইতিহাস তুলে ধরতেই এই মেলার আয়োজন।