ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় একটি তৈরি পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও আশুলিয়া থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার দ্য রোজ ড্রেসেস লিমিটেড কারখানায় ঝুটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরকার ও তাঁর নেতা-কর্মীরা। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কবির হোসেনের লোকজন স্থানীয় বিএনপির একটি পক্ষের সহযোগিতা নিয়ে সে ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে রাখেন। গতকাল সকাল নয়টার দিকে আশুলিয়া থানা বিএনপির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা-কর্মী ওই কারখানার সামনে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে যান। এ সময় কবির হোসেনের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেছে।
বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কবির হোসেন গত ৫ আগস্টের আগে ওই পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হত্যার ২৫টিরও অধিক মামলা হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গতকাল কারখানার সামনে যাই। এ সময় আওয়ামী লীগের আরিফ মাদবর, রতন, তানভীর, গালকাটা জুয়েল, হান্নান, পারভেজসহ প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ জন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় আমরা নিরাপদ স্থানে চলে যাই।’
তবে আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঝুট ব্যবসা নিয়ে যুবলীগ নেতা কবির হোসেনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিএনপির কিছু নেতা-কর্মীর ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। দলের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে ঝুট ব্যবসা দখলসহ যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে না জড়াতে নির্দেশনা রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে কবির হোসেন পলাতক থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। গুলি ছোড়ার বিষয়টি জানা নেই। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত বাকিদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।