‘অপহৃত’ তরুণী থানায় বললেন ‘আমি কখন, কোথায়, কীভাবে গেলাম জানি না’

প্রতীকী ছবি

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সামনে থেকে ‘অপহরণ’ হওয়া তরুণী (২৪) বললেন, ‘আমি অসুস্থ। আমি কখন, কোথায়, কীভাবে গেলাম জানি না।’

গতকাল রোববার রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই তরুণীকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সোনাডাঙ্গা থানায় হাজির করা হয়। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তবে তিনি প্রথমে বলেছিলেন, ‘আমাকে অপহরণ করা হয়নি। আমি আমার আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে গিয়েছিলাম।’

যে গাড়িতে করে ওই তরুণী ও তাঁর মাকে টানাহেঁচড়া করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই গাড়িতেই তাঁকে থানায় নিয়ে আসা হয়, সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন যুবক। সোনাডাঙ্গা থানায় নিয়ে আসার সময় ওই মেয়ের সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা ও এক মামি। থানা থেকে আবারও ওই গাড়িতে করে তাঁদের ডুমুরিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিয়ে যাওয়ার আগে সাংবাদিকেরা কথা বলেন ওই তরুণীর সঙ্গে। এ সময় ওই তরুণী বলেন, ‘গাড়িতে করে যশোরের কেশবপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে এসেছি।’

আরও পড়ুন

গত শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হন ওই তরুণী। তখন তরুণীর পরিবার চিকিৎসকদের কাছে অভিযোগ করেন, সন্ধ্যায় ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন। এ বিষয়ে গতকাল রাতে তরুণী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এজাজ চেয়ারম্যানের (ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ) সঙ্গে আমার মেলা দিনের সম্পর্ক। বিভিন্ন সময় সুবিধা-অসুবিধায় তাঁর কাছে যাই।’ তিনি সার্বিক বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।

ধর্ষণের খবর শুনে তরুণীকে সহায়তা করতে গতকাল হাসপাতালে গিয়েছিল বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার একটি প্রতিনিধিদল। সংস্থাটির খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মোমিনুল ইসলাম বলেন, ওসিসির সামনে আগে থেকে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে ১০ থেকে ১২ জন উপস্থিত ছিলেন। ওই তরুণী ছাড়পত্র নিয়ে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। ওই সময় তাঁদের সংস্থার সদস্যদেরও মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে রুদাঘরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তৌহিদুজ্জামান কয়েকজনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছেন। তৌহিদুজ্জামান উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই।

সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, শোনা যাচ্ছিল খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে একটি মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামান জড়িত আছেন। সে জন্য তাঁকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। এখন ওই তরুণী নিজে এসে দাবি করছেন, তিনি অপহৃত হননি। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে ছেড়ে দেওয়া হবে। অপহরণের বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।