নিজের তৈরি ‘উড়োজাহাজে’ আকাশে উড়লেন মানিকগঞ্জের তরুণ জুলহাস

জুলহাসের তৈরি বিমান ওড়ানো দেখতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাজির হয়েছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় যমুনা নদীর চরেছবি: প্রথম আলো

ইচ্ছাশক্তি এবং চেষ্টা থাকলে অনেক কঠিন বিষয়ও সম্ভবপর হয়ে ওঠে। তেমনি চেষ্টা ও পরিশ্রমে ‘উড়োজাহাজ’ তৈরি করেছেন মানিকগঞ্জের এক তরুণ। শুধু তৈরিই নয়, নিজেই সেটি সফলভাবে আকাশে উড়িয়েছেন।

এই তরুণের নাম জুলহাস মোল্লা (২৮)। তাঁর বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ষাইটঘর তেওতা গ্রামে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তিনি উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় যমুনা নদীর চরে নিজের তৈরি উড়োজাহাজে চড়ে উড়ে বেড়ান। জেলা প্রশাসকসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাঁর তৈরি বিমান উড্ডয়নের দৃশ্য দেখতে সেখানে হাজির হয়েছিলেন। স্থানীয় হাজারো উৎসুক লোকজনও সেখানে ভিড় করেন।

৫০ ফুট ওপরে উড়তে পারে উড়োজাহাজটি। মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় যমুনা নদীর চরে
ছবি: প্রথম আলো

জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লার গ্রামের বাড়ি ছিল জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায়। পরে নদীভাঙনের কারণে বর্তমানে তাঁরা শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর তেওতা এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করছেন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জুলহাস পঞ্চম। জিয়নপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন। তবে অর্থাভাবে আর পড়তে পারেননি। পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান জুলহাস ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। অবসরে তিনি এই উড়োজাহাজ তৈরি করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে শিবালয়ের জাফরগঞ্জ যমুনা নদীর চরে নিজের তৈরি উড়োজাহাজ ওড়ানোর আগে কথা হয় জুলহাসের সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, তিন বছর গবেষণা এবং এক বছর সময় লেগেছে উড়োজাহাজটি তৈরি করতে। সব মিলিয়ে প্রায় ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। অ্যালুমিনিয়াম ও লোহা দিয়ে বিমানটির অবকাঠামো তৈরি। পানির পাম্পের ‘সেভেন হর্স পাওয়ারের’ ইঞ্জিন ব্যবহার করেছেন তিনি।

অ্যালুমিনিয়াম ও লোহা দিয়ে উড়োজাহাজটির অবকাঠামো তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় আট লাখ টাকা
ছবি: প্রথম আলো

জুলহাস বলেন, এই উড়োজাহাজ মূলত পরীক্ষামূলকভাবে প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে এটি তৈরি করা হয়নি। তবে সরকারি অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাণিজ্যিকভাবে এটি তৈরি করা যেতে পারে। ৫০ ফুট ওপরে উড়তে পারে উড়োজাহাজটি।

জেলা প্রশাসক মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, জুলহাসের গবেষণাকাজে সরকার সহযোগিতা করবে। তবে এটি কারিগরি বিষয়। প্রাথমিকভাবে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করে তাঁকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।