তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আপসের জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ

হত্যা মামলার সঠিকভাবে তদন্ত না করে আপস করার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন। শনিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যালয়েছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীতে একটি হত্যা মামলার সঠিকভাবে তদন্ত না করে উল্টো তদন্ত কর্মকর্তাই আপস করার চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলার বাদী ফরিদা আক্তার নামের এক নারী আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।

ফরিদা আক্তার তাঁর বাবাকে হত্যার অভিযোগে বাবার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। তাঁর বাবা মোজাম্মেল হক ফারুককে হত্যার অভিযোগে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রাজপাড়া থানায় মামলা করেন তিনি। প্রায় ১০ মাস পার হয়ে গেলেও মামলার কোনো তদন্ত হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদা আক্তার বলেন, ‘আমার বাবা মোজ্জাম্মেল হক দুটি বিয়ে করেন। আমি তাঁর প্রথম ঘরের মেয়ে। বাবার দ্বিতীয় ঘরে দুটি মেয়ে আছে। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী কামরুন হক বাবার চাকরিজীবনে অর্জিত সব টাকা ও জমি আত্মসাৎ করেছেন। আমাদের কিছুই দেননি। তাঁরা রাজশাহী শহরের দাশপুকুর এলাকায় তিন কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি ও স্থায়ী আমানতের ৬০ লাখ টাকা ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জে চার বিঘা জমি ৪৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে নিয়ে যান। এভাবে মোট ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন দ্বিতীয় পরিবারের স্ত্রী-সন্তান ও জামাতারা।’

ফরিদা আরও বলেন, ‘২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আমার বাবাকে নিয়ে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী, দুই সন্তান ও জামাতারা লাপাত্তা হয়ে যান। ২৩ সেপ্টেম্বর এক আত্মীয়ের মুখে বাবার মৃত্যুর খবর শুনি। তাঁরা ঢাকায় বাবার লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁদের চাপ দিলে রাজশাহীতে লাশ নিয়ে আসেন। বাবা অসুস্থ ছিলেন দাবি করে তাঁরা তিন দিনের মধ্যে চিকিৎসার কাগজপত্র দেখাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এত দিন পার হলেও চিকিৎসার কাগজ দেখানো হয়নি।’

ফরিদা বলেন, ‘তাঁদের (দ্বিতীয় স্ত্রী ও তাঁর দুই সন্তান) কালক্ষেপণ করার জন্য আমি বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা করি। আদালত মামলা নিয়ে লাশের ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন। এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) রাজশাহীর পরিদর্শক শামীম আক্তার। তদন্ত কর্মকর্তা দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কোনো তদন্ত করেননি। লাশের ময়নাতদন্তেরও ব্যবস্থা করেননি। উল্টো আমাকে আপস করার জন্য চাপ দিচ্ছেন।’ তিনি ইচ্ছা করে কালক্ষেপণ করেছেন বলে অভিযোগ করেন ফরিদা আক্তার।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শামীম আক্তার মুঠোফোনে তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, মামলাটি তাঁদের (বাদীর) পারিবারিক। বারবার নোটিশ দিলেও তাঁরা গ্রহণ করেন না। সাক্ষীদের আনতেও পারেন না। এখন আদালতের সঙ্গে কথা বলে তিনি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।