পঞ্চগড়ে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একজন নিহত
পঞ্চগড়ের ঘটনায় জাহিদ হাসান (২৩) নামের আরও এক তরুণ নিহত হয়েছেন। নিহত জাহিদ আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বলে জানা গেছে। তাঁর বাড়ি নাটোরের বনপাড়া এলাকায়। বিক্ষোভকারীরা তাঁকে করতোয়া নদীর ধারে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসার আহ্বায়ক আহমদ তবশের চৌধুরী।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা দুজন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুপুরের দিকে সংঘর্ষ চলাকালে আরিফুর রহমান (২৮) নামের এক তরুণ নিহত হন। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছিল। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ৯ সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে সংস্থাটির জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার রাতে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে পঞ্চগড় শহরে বিক্ষোভ মিছিল করার সময় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ থেমেছে। বিক্ষোভকারীদের হামলায় বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শহরের বেশির ভাগ জায়গায় রাত ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
শুক্রবার রাত পৌনে আটটার দিকে বিক্ষোভ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে শহরে এখনো পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব টহল দিচ্ছে। রাত ১০টার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। এদিকে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা অনিবার্য কারণবশত বন্ধ করা হয়েছে বলে শহরে মাইকিং করছে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। মাইকিংয়ে বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়।
রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত শহরের চৌরঙ্গী মোড়, ধাক্কামারা, জালাসী, এমআর কলেজ মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শহরের পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলছে। তবে সাধারণ মানুষ এখনো আতঙ্কিত। শহরের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ দেখা গেছে। শহরবাসীর অনেকেই মূল দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বাইরের পরিস্থিতি দেখার চেষ্টা করছেন। বাইরে থেকে অনেকে বাড়ির পথে ছুটছেন।
পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধ করার জন্য তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁরা জলসা বন্ধ করে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে কেউ মারা যাওয়ার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।