সেন্ট মার্টিনে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণে সংসদীয় কমিটির উদ্বেগ
কক্সবাজারের টেকনাফের প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে শনিবার বিকেলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৩৩তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, অপরিকল্পিত অবকাঠামো সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। যেকোনো মূল্যে সেন্ট মার্টিনকে রক্ষা করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে সেন্ট মার্টিনে কেউ ভ্রমণে আসতে আগ্রহ দেখাবে না।
অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ ও কেয়াবন উজাড়ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ১৯৯৭ সালের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে তিনি সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে গিয়েছিলেন। তখন তিনি সেন্ট মার্টিনের সৌন্দর্য দেখে, দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখে বিমোহিত হয়েছিলেন। তখন দ্বীপজুড়ে তিনি প্রবাল-শৈবাল, শামুক-ঝিনুক, কেয়াবনের জঙ্গল দেখতে পান, যা দেখে সবার মন জুড়িয়ে যেত। এখন দ্বীপে এসে হতাশ হতে হলো।
দ্বীপের দক্ষিণ সৈকতের একটি বাংলোতে র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভা হয়। এতে সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজারের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা আহমদ, পর্যটনসচিব মোকাম্মেল হোসেন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিনুর রহমান, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান, কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও আবদুর রহমান বদি উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফ থেকে জাহাজে চড়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পৌঁছান স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এরপর তাঁরা দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। বিকেলে বৈঠকে বসেন কমিটির সদস্যরা।
বৈঠকে দ্বীপের যত্রতত্র অবৈধভাবে এবং অপরিকল্পিতভাবে হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট নির্মাণ, প্রাকৃতিকভাবে সৃজিত উপকূল রক্ষার কেয়াবন উজাড় এবং প্লাস্টিক বর্জ্যসহ ময়লা–আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। অতি দ্রুত এসব বন্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক প্রথম আলোকে বলেন, সরেজমিন পরিদর্শনের সময় কমিটির সদস্যরা অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো তৈরির দৃশ্য দেখতে পান। প্রতিবেশ সংকটাপন্ন ছেঁড়াদিয়াসহ সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় কমিটির সদস্যরা কিছু সুপারিশ গ্রহণ করেছেন। রোববার দুপুরে কক্সবাজারে অনুষ্ঠেয় কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত এবং সেন্ট মার্টিনের বিষয়ে করণীয় তুলে ধরা হবে।