আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভে আহত নারী শ্রমিকের মৃত্যু

মরদেহপ্রতীকী ছবি

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত শ্রমিক চম্পা খাতুনের (৩০) মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত চম্পা খাতুন (৩০) রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার আমোদপুর গ্রামের চান্দু মিয়ার মেয়ে। তিনি আশুলিয়ার জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন।

আজ দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (পরিদর্শক) ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার আশুলিয়ায় শ্রমিকদের আন্দোলনের সময় আহত শ্রমিক চম্পা খাতুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

এদিকে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মারুফা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘যতটুকু দেখেছি শারীরিক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন। তবে মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’

নিহত চম্পা খাতুনের খালা রাশেদা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বুকে গুলি লাগার কারণে মাইয়াটা আমার বাঁচল না। বাম হাতে গুলি লাইগা মাংস ছিঁড়ে গেছে। চম্পার দেড় বছরের একটা মাইয়া আছে। অকালে মাইয়াটারে এতিম করল।’ তিনি জানান, তাঁরা চম্পার লাশ রংপুরে দাফন করবেন।

গত বুধবার সকালে সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুরের গোরাট এলাকায় বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও বকেয়া তিন মাসের বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে তাঁরা আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের তাঁদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান এবং ওই কারখানাগুলো লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক ও পুলিশ সদস্য আহত হন।

আরও পড়ুন

ঘটনার দিন আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেছিলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। কোনো ধরনের গুলি ছোড়া হয়নি। দৌড়াদৌড়ির সময় ইটের টুকরোর আঘাতে কেউ আহত হয়ে থাকতে পারেন।