সরাইলে বিএনপি ও যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় বিএনপি ও যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডি এম দুলাল ও উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব নূর আলমের পক্ষের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলা সদরের স্থানীয় অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ‘তরুণ দল’–এর আজ কমিটি গঠনের কথা ছিল। এ উপলক্ষে আজ বিকেলে উপজেলা সদরের সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে কর্মিসভা হয়। উপজেলা বিএনপির আংশিক কমিটির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুরের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা তরুণ দলের সভাপতি আজিজুল রহমান। নূর আলমের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব এস এন তরুণ দে, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর, সাংগঠনিক সম্পাদক ডি এম দুলাল, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান প্রমুখ। কর্মিসভা শেষে কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।
কর্মিসভা শেষে স্থানীয় অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মোড়ে আজিজুলের সামনে তর্কে জড়িয়ে পড়েন দুলাল ও নূর আলম। কিছুক্ষণের মধ্যে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। কিছুক্ষণের মধ্যে সংঘর্ষ সরাইল বৈকার বাজারের আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে দোকান বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নারী-পুরুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। আধা ঘণ্টা পর পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ছয়জনকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামুন মিয়া ও সবুজ মিয়া নামের দুজনকে জেলা সদরের দুটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপি ও যুবদলের একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, সরাইল উপজেলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের মধ্যে একাধিক গ্রুপ রয়েছে। তবে এত দিন দুলাল ও নূর আলম একই পক্ষের লোক ছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁদের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
দুলালের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে নূর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুলাল তাঁর ভাইকে তরুণ দলের সম্পাদক বানাতে চান। কিন্তু তাঁর ভাই করে ছাত্র সমাজ। এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে আমার কথা–কাটাকাটি হয়। পরে দুলালের লোকজন বাজারে এসে হুমকি–ধমকি দিচ্ছিলেন। আমার লোকজন তাঁদের একাধিবার ধাওয়া দিয়ে বাজার ছাড়া করেছে। বিষয়টি আমার দলীয় লোকজন শেষ করার চেষ্টা করছেন।’
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে যা হয়েছে, তা কর্মিসভার সঙ্গে যুক্ত কোনো বিষয় নয়। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমরা এটি শেষ করা চেষ্টা করছি।’
সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে আছি। বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’