সিলেটে যুবদল কর্মী হত্যা মামলার তিন আসামিকে আদালতে নেওয়ার সময় হামলা, একজন হাসপাতালে
সিলেটের যুবদল কর্মী বিলাল আহমদ মুন্সী (৩৫) হত্যার ঘটনায় নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার তিন আসামিকে সিলেটের আদালতে তোলার সময় হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত এক আসামি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে বিলাল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার এজাহারভুক্ত তিন আসামি মো. রুনু মিয়া (টেম্পু মঈন), রাসেল আহমদ ও জাকিরকে সিলেটের ৩ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক ছগির আহমেদের আদালতে নেওয়া হয়। বেলা সোয়া তিনটার দিকে আসামিদের প্রিজন ভ্যান থেকে নামানোর পরপরই একদল ব্যক্তি আসামিদের মাথা ও শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে কিল, চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারতে থাকে। কেউ কেউ আসামিদের জুতাপেটাও করেন। এ সময় পুলিশ বিক্ষুব্ধদের ফেরানোর চেষ্টা করে।
পুলিশ জানায়, হামলায় তিন আসামিই আহত হন। আদালতের কাজ শেষে আসামিদের সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে সন্ধ্যার পর রাসেল আহমদ ও জাকিরকে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় রুনু মিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রুনু মিয়া সিলেট জেলা হিউম্যান হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি।
হামলার বিষয়টি স্বীকার করে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, শাহপরান থানা-পুলিশ আসামিদের আদালতে নিয়ে যায়। সেখানে কিছু ব্যক্তি অতর্কিতে আসামিদের ওপর হামলা করে। পুলিশ প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
এর আগে গত সোমবার রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় বিলাল নিহত হন। তিনি নগরের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের যুবদল কর্মী হিসেবে পরিচিত। বিলাল পেশায় একজন রংমিস্ত্রি। হত্যাকাণ্ডের পরপরই অভিযোগ ওঠে, যুবদল-ছাত্রদলের প্রতিপক্ষ নেতা-কর্মীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বিলাল নিহত হন। তবে পরিবার ও স্থানীয় বিএনপির দাবি, হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জড়িত।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই মোস্তাক আহমদ (বাদশা) গতকাল বুধবার ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে শাহপরান থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় সাত থেকে আটজনকে। মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে ঢাকায় যাওয়ার পথে নরসিংদী পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের নরসিংদী থেকে নিয়ে এনে আজ আদালতে তোলে শাহপরান থানা-পুলিশ।
এদিকে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এজাহারভুক্ত আসামিরা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী হিসেবে স্থানীয়ভাবে পরিচিত। অন্যদিকে মামলার বাদীর দাবি, এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে বিএনপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থক আছেন।