দাঁড়িয়ে ছিলেন মার্কেটের নিচে, এসি বিস্ফোরণে হারালেন পা

চট্টগ্রামের বিপণিবিতান কেবিএইচপ্লাজায় এসির বিস্ফোরণের তিনজন আহত হয়। বিস্ফোরিত এসির পাশের দুটি এসিও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আজ দুপুরে হিলভিউ আবাসিক এলাকায়
জুয়েল শীল

মার্কেটের সামনে মোটরসাইকেল রেখে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেসরকারি কর্মকর্তা কাজী তৌহিদুল আলম (৩৯)। পাশের একটি মার্কেটে তখন এসি মেরামতের কাজ করছিলেন দুই শ্রমিক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিস্ফোরণ ঘটে এসিতে। এতে ছিটকে পড়েন ওই দুই শ্রমিক। বিস্ফোরণে এসির যন্ত্রাংশ ছিটকে পড়ে তৌহিদুলের পায়ে। এতে গোড়ালির ওপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তাঁর পা।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম নগরের প্রবর্তক এলাকায় কেবিএইচ প্লাজা নামের একটি বিপণিবিতানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত দুই শ্রমিক ও ওই পথচারীকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এর মধ্যে দুই শ্রমিকের নাম গফুর (২৮) ও নুর আলম (৩০) বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। আহত তৌহিদুল আলমকে নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এসির বিস্ফোরণে ভেঙে পড়ে পাশের বিপণিবিতানের দেয়ালে লাগানো এলইডি মনিটর। আজ দুপুরে হিলভিউ আবাসিক এলাকায়
জুয়েল শীল

প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, কেবিএইচ প্লাজায় এসি মেরামতের কাজ করছিলেন ঢাকা থেকে আসা দুই শ্রমিক। এ সময় মিমি সুপার মার্কেটের পাশে মোটরসাইকেল রেখে দাঁড়িয়েছিলেন তৌহিদুল আলম। ওই সময় বিকট শব্দে এসি বিস্ফোরিত হয়। এতে পাশের মার্কেটের সামনের চত্বরে ছিটকে পড়েন দুই শ্রমিক। আর বিস্ফোরিত এসি থেকে লোহার টুকরা ছিটকে পড়ে ওই পথচারী তৌহিদুলের পায়ে। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে দেখা যায়, কেবিএইচ প্লাজার তৃতীয় তলার বাইরে তিনটি এসির একটি বিস্ফোরণে দুমড়েমুচড়ে গেছে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় পাশের মার্কেটের বাইরের বড় এলইডি মনিটরে ভেঙে গেছে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় দুই শ্রমিক ওই কাচের দেয়ালের গায়ে ছিটকে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তবে আহত তিনজনের মধ্যে পথচারী তৌহিদুল আলমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

বিস্ফোরণে উড়ে গেছে এসির পুরো যন্ত্রাংশ। ভেঙে গেছে সংস্কারের জন্য লাগানো মই। আজ দুপুরে হিলভিউ আবাসিক এলাকায়
জুয়েল শীল

আহত তৌহিদুলের খালাতো ভাই শাহেদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, তৌহিদুল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আইটি বিভাগের কর্মকর্তা। তাঁকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁর পায়ের চিকিৎসা বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানাননি চিকিৎসকেরা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (উপপরিদর্শক) নুরুল আলম বলেন, মিমি সুপার মার্কেটের পাশে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় গফুর ও নুর আলমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরজনকে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের ঠিকানা কিংবা বিস্তারিত পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

ঘটনাস্থলে থাকা পাঁচলাইশ থানার উপপরিদর্শক রেজাউল করিম বেলা আড়াইটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মার্কেট কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি এখানে। আমরা তদন্ত করছি। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।’